হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ফুলচাঁদ শেখ। —নিজস্ব চিত্র।
ফের রাজনৈতিক হিংসার বলি মুর্শিদাবাদে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাতে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হলেন এক তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা থানার অন্তর্গত কাপাসডাঙা ষষ্ঠীতলা এলাকায়। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম বাবর আলি (৪০)। শুক্রবার রাতে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন বাবর এবং ফুলচাঁদ শেখ। তখনই দুষ্কৃতী এসে দু’জনকে বেধড়ক মারধর করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা বাবরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠছে কংগ্রেসের দিকে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রজব আলি জানিয়েছেন, “ভোটের কাজ সেরে বাবর এবং ফুলচাঁদ চায়ের দোকানে বসেছিলেন। সেই সময় কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা দু’জনের উপরে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে দু’জনকে খুনের চেষ্টা করেন। তার মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।” যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তিনি বলেন, “জেলা জুড়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশের মদতে তাণ্ডব চালাচ্ছেন। অবাধ সন্ত্রাস চলছে জেলায়। বেলডাঙাক ঘটনায় কংগ্রেস কোনও ভাবে যুক্ত নয়, ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার বলেন, “কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা যে ভাবে আক্রমণ শুরু করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
খুনের ঘটনায় মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছেছে। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, মনোনয়নের প্রথম দিন থেকেই একাধিক হিংসার ঘটনার জন্য বার বার শিরোনামে এসেছে মুর্শিদাবাদ। অশান্তি, হানাহানিতে প্রাণও গিয়েছে কয়েক জনের। শুক্রবার মুর্শিদাবাদে সফরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। সেখানে নবগ্রামে খুন হওয়া তৃণমূল নেতার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এর পর যান খড়গ্রামের নিহত কংগ্রেস কর্মীর বাড়ি। রাজ্যপালের এই সফরের মধ্যেই রানিনগরের ইসলামপুরে কংগ্রেস প্রার্থীর দাদাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই দিনই ফের রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটল বেলডাঙায়।