কাটমানি কালি মুছতে ‘চাইলেও পয়সা নয়’

তোলা’র টাকা কিংবা চালু লব্জে  কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার হিড়িক পড়েছে বহু জায়গায়।

Advertisement

মৃন্ময় সরকার

লালবাগ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৪
Share:

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের তোলা আদায়ের অভিযোগে স্বীকৃতি দেওয়ায় দলের অনেকের ‘মুখোশ’ যে খুলে গিয়েছে, টাকা ফেরত দিয়ে অনেকেই তার প্রমাণ রেখেছেন। তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভও রয়েছে।

Advertisement

তোলা’র টাকা কিংবা চালু লব্জে কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার হিড়িক পড়েছে বহু জায়গায়। কোথাও সাধারণ মানুষ নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন দিনভর, কোথাও বা সরাসরি অভিযোগ পৌঁছিয়েছে প্রশাসনের কাছে। এই অবস্থায় নতুন করে যাতে কাটমানি নেওয়ার ভূত ঘাড়ে না চাপে তাই কোথাও বা সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন।

মুর্শিদাবাদের লালবাগ জেলা প্রশাসন সে তালিকায় অন্যতম। ঝুঁকি না নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা বিলি-বণ্টন না করে নিজেরাই তা তুলে দিলেন উপভোক্তাদের হাতে।

Advertisement

মঙ্গলবার, ‘সকলের জন্য আবাস' প্রকল্পের এক লক্ষ টাকার চেক উপভোক্তাদের হাতে তুলে দিয়ে মুর্শিদাবাদ পুরসভার প্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘আমরা স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই পুরসভার পক্ষ থেকেই উপভোক্তাদের হাতে টাকা তুলে দিলাম। সবার হাতে মাইক তুলে দিয়ে বলেছি, কোনও অভিযোগ থাকলে বলুন। সকলে শুনুক।’’ সে সাহস অবশ্য কেউ করেননি। মঞ্চ থেকে নেমে এসে এক উপভোক্তা বলছেন, ‘‘মঞ্চে উঠে নাম ফাঁস করি, আর আমার এই সামান্য চেকটুকুও ফিরিয়ে নিক, পাগল!’’

বিরোধীরা অবশ্য পুরসভার এই উদ্যোগকে ‘নিছক লোক দেখানো’ বলছেন। জেলা কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘কাটমানি নিয়ে হইহই ধামা চাপা দিতে পুরসভার এই উদ্যোগ।’’

এ দিন মোট ন’শো উপভোক্তার হাতে প্রকল্পের এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দেয় মুর্শিদাবাদ পুরসভা। মঙ্গলবার পুরসভার ভবনের সামনে রবীন্দ্র-নজরুল মঞ্চে আনুষ্ঠানিক ভাবে উপভোক্তাদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।

২২-২৪ জুন মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে উপভোক্তা ও কাউন্সিলরদের নিয়ে মুখোমুখি বসিয়ে তিন দিনের একটি শিবির করেছিল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। শিবিরে সরাসরি উপভোক্তাদের হাতে মাইক ধরিয়ে অভিযোগ জানানোর কথা বলেছিলেন পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী। পরে পুরসভার একটি আলাদা ঘরে অভিযোগ দায়ের করার জন্য সেলও খোলা হয়েছিল। তবে সেখানেও কোনও উপভোক্তা অভিযোগ জানানি।

বিপ্লব বলেন, ‘‘কাটমানি নিয়ে যত না কাণ্ড হয়েছে, বিজেপি তার চেয়ে ঢের বেশি অপপ্রচার চালাচ্ছে। কাটমানি প্রসঙ্গে এর আগে উপভোক্তা ও কাউন্সিলরদের নিয়ে সভা করেছি। কেউ এগিয়ে আসেননি। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কেউ এক পয়সা চাইলে দেবেন না। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement