সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার জীবন কৃষ্ণ সাহা। — ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের হাতে ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহা কি মুখ খুলেছেন? যদি মুখ খুলে থাকেন, কার কার নাম বলেছেন? জেলা জুড়ে তৃণমূলে ‘জীবনাতঙ্ক’ ভর করেছে অনেকের উপরই।
সবারই এক কৌতুহল এর পর কে ? নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতার নিয়ে ৭২ ঘণ্টার নাটক যথেষ্ট উপভোগ করেছেন যেমন জেলা ও রাজ্যের মানুষ, তেমনই মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে কাঁপন ধরিয়েছে তা শাসক শিবিরে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লার মতে, “এ জেলাতে একে একে অনেক জীবনকৃষ্ণ বেরোবে। ইডি, সিবিআই তৎপর হলে জেলেও যাবে তারা।” বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুজিত দাস বলছেন, “এখন তো সবে শুরু হয়েছে চাকরি চুরি দিয়ে। গরু পাচার তো এখনও আসেইনি। আমাদের কাছে খবর আছে শাসক দলের ৪ বিধায়ক গরু পাচারে নজরে আছে কেন্দ্রীয় সংস্থার। চাকরি চুরিতে ৫ জন।”
আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “জীবন একা নয়। চোরে চোরে দল পরিপূর্ণ হয়ে আছে। রাজ্যের ২৩টি জেলাতেই এমন বহু জীবনকৃষ্ণের খোঁজ মিলবে।”তবে জীবন-কাণ্ডের পর তৃণমূলের প্রায় সব নেতার মুখেই এখন কুলুপ।
মুর্শিদাবাদ জেলায় শাসক দলের অন্তত ৭ জন বিধায়ক এই মুহূর্তে রয়েছেন ইডি ও সিবিআইয়ের নজরে। নবগ্রামের বিধায়কের নামে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি, যদিও তা বিশ্বাস করতে এখনও রাজি নন বিধায়ক কানাইচন্দ্র মণ্ডল নিজে। ইডির তালিকায় নাম রয়েছে জাকির হোসেনেরও। অসুস্থ বলে তিন মাসের সময় নিয়েছেন তিনি ইডির কাছে হাজির হতে।আরও যে ৫ জনের নাম জানা যাচ্ছে বিভিন্ন সূত্র থেকে, তার মধ্যে রয়েছেন, মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার দুই এবং জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার তিন বিধায়ক রয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে। এছাড়াও সামনে আসছে এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তার নাম। এদের সকলের সঙ্গে জীবনকৃষ্ণের যোগাযোগ ছিল। সিবিআই মনে করছে রাজ্যের মধ্যে এজেন্ট হিসেবে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের অর্থ আদায়ের পান্ডা জীবনকৃষ্ণ।
তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ সংগঠনের চেয়ারম্যান সাংসদ আবু তাহের বলেন, “জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এটা বড় কথা নয়। কারণ যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকে সে আইনের পথে সাজা পাবে। তবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে যেভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে কাজে লাগাচ্ছে সেখানেই আমাদের বিরোধ আছে।”
এর মধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে, জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী টগরী ও বাবা বিশ্বনাথকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।