Murshidabad Unrest

‘মুখ্যমন্ত্রীর ১০ লক্ষ টাকা নেননি, আমাদের ২০ লক্ষ নিয়েছেন’! মুর্শিদাবাদের পরিবারের কাছে ‘কৃতজ্ঞ’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু

শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় যেতে পারেন শুভেন্দু। তবে সেখানে কোনও জমায়েত এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:২৮
Share:
Suvendu Adhikari in Murshidabad

মৃত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: ফেসবুক।

মুর্শিদাবাদে মৃত পিতা-পুত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের অর্থসাহায্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, হরগোবিন্দ এবং চন্দন দাসের পরিবারের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ব্রাত্য’। কারণ, রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করেনি ওই পরিবার। কিন্তু বিরোধী দলনেতার কাছ থেকে অর্থসাহায্য নিয়েছে। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘আমাকে ওঁরা গ্রহণ করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’’

Advertisement

কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি পেয়ে শুক্রবার মুর্শিদাবাদে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় অগ্নিগর্ভ এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন তিনি। একটি মন্দিরে গিয়ে মূর্তি দেন গ্রামবাসীদের। সেখানে নন্দীগ্রামের বিধায়ক গ্রামবাসীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘শপথ নিচ্ছি, আমাদেরও দিন আসবে। আপনারা পুরোহিত ডেকে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শুদ্ধিকরণ করুন (মন্দির)।’’ তার আগে শুভেন্দু গিয়েছিলেন খুন হওয়া হরগোবিন্দ এবং চন্দনের বাড়িতে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলে বেরিয়ে আসেন।

মুর্শিদাবাদের হিংসা বিধ্বস্ত জাফরাবাদ এলাকায় খুন হওয়া বাবা-ছেলের দুটি পৃথক পরিবার। দুই পরিবারকে আলাদা করে দশ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন বিরোধী দলনেতা। সেই সঙ্গে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে উত্তেজনা ছড়ানো এবং হিংসার জন্য রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি। শুভেন্দুর সামনেই স্থানীয়দের একাংশ বিএসএফ ক্যাম্পের দাবি করলে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি হাই কোর্টে যাবেন। কেন্দ্রকেও জানাবেন। হরগোবিন্দ ও চন্দনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘পরিবার নাকি সিপিএম বলেছে? প্রমাণ হয়ে গেছে এরা হিন্দু পরিবার। সবাই বলছেন, চরম আতঙ্কে রয়েছেন। সবাই বলছেন, কেন তাঁরা এনআইএ তদন্ত চান।’’ পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর ১০ লাখ টাকা প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা ১০ লক্ষ টাকা করে দুই পরিবারকে দিয়েছি। তারা গ্রহণ করেছে। হিন্দুদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী ব্রাত্য। বিরোধী দলনেতাকে সকলে গ্রহণ করেছেন। প্রমাণ হয়ে গেল হিন্দুদের জন্য আমরা সব কিছু করতে পারি।’’

Advertisement

মুর্শিদাবাদকাণ্ডে শুক্রবার রিপোর্ট দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তাতে বলা হয়েছে, অশান্তির সময়ে আক্রান্তেরা পুলিশকে পাশে পাননি। কেউ কেউ দেরিতে পুলিশের সাহায্য পেয়েছেন। বাকিরা পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা দেখেছেন। শুধু তা-ই নয়, মহিলা কমিশন তাদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে বলেছে, দাঙ্গাবাজদের প্রতি নরম অবস্থান দেখিয়েছে পুলিশ। এই সমস্ত কারণে পুলিশ-প্রশাসনের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা কমেছে। আর শুভেন্দুর দাবি, গত ১১-১২ এপ্রিল সব মিলিয়ে এক হাজার জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখনও পর্যন্ত ৫৮৪ জনকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। চায়ের দোকানদার, টোটোচালককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় যেতে পারেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন থাকতে পারবেন। তবে সেখানে কোনও জমায়েত করা এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করা যাবে না বলে শর্ত দেয় হাই কোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement