সিএএ এবং এনআরসির প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল। বুধবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
কিছু দিন আগেই রাজ্য সভাপতিকে এনে কৃষ্ণনগর শহরে মিছিল করেছিল বিজেপি। বিজেপির গোটা উত্তর সাংগঠনিক জেলা থেকে কর্মী এনে ভিড় জমানো ওই মিছিলকে ছাপিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের। বুধবার এনআরসি-সিএএ বিরোধী মিছিলে কৃষ্ণনগর শহরের বাসিন্দাদের উপস্থিতি দেখে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল নেতারা। তাঁদের দাবি, এই সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জিই বিজেপির কাল হবে।
শুধু কৃষ্ণনগর শহরের বাসিন্দাদের নিয়ে বুধবার এই মিছিলের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। উপস্থিত ছিলেন দলের নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। রাজবাড়ির মাঠ থেকে শুরু হয়েছিল মিছিল। সদর মোড়ে মিছিল শেষ হওয়ার পরে সভা করে তৃণমূল। সেই সভায় রাজীব বলেন, “আমাদের দলের কারও ব্যবহারে যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হিসাবে আমি হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” যা শুনে সভায় আসা এক তৃণমূল কর্মী বলেই ফেলেন, “এটা এনআরসি-সিএএ বিরোধী কর্মসূচি বলা হলেও আসলে এই মিছিল থেকেই শহরের বুকে পুরভোটের দামামা বাজিয়ে দেওয়া হল।” কৃষ্ণনগর শহরের তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, প্রায় পনেরো হাজার লোক এ দিন মিছিলে হেঁটেছেন। শুধু শহরের লোকদেরই ডাকা হয়েছিল। সাম্প্রতিক কালে শুধু মাত্র শহরের লোকেদের নিয়ে কৃষ্ণনগরে এত বড় মিছিল খুব একটা দেখা যায়নি। গত লোকসভা ভোটে তো কৃষ্ণনগর পুরসভার একটি মাত্র ওয়ার্ড ছাড়া বাকি সব ক’টিতেই বিজেপির তুলনায় পিছিয়ে পড়েছিল তৃণমূল। এ দিন যাঁরা মিছিলে আসেন, তাঁদের বড় অংশই ছিলেন মহিলারা। প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহা বলেন, “মহিলাদের এত স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি হবে তা আমরাও ভাবতে পারিনি। তাঁরা আসলে বুঝতে পারছেন যে পরিবার ও সন্তানদের এই কালা কানুনের হাত থেকে রক্ষা করতে তাঁদেরই রাস্তায় নামতে হবে।”
বিজেপি উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া কনভেনার সন্দীপ মজুমদার অবশ্য দাবি করেন, ‘‘শহরের লোক কোথায়! সব তো দেখলাম আশপাশে পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আসা।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এ দিন সভায় তিনি বলেন, “আজ আদালতে শুনানি ছিল। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে উত্তর দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে। আশা করছি, এমন একটি অসাংবিধানিক আইনকে সুপ্রিম কোর্ট মান্যতা দেবে না।”