প্রতীকী ছবি।
এক ফোনেই ‘মিটল’ দ্বন্দ্ব।
তাঁদের ‘সুমধুর’ সম্পর্ক নিয়ে দলে তো বটেই, বিরোধীদেরও আলোচনার শেষ নেই। রাজ্যের শাসকদলের সেই মন্ত্রী জাকির হোসেনের সঙ্গেই ‘বঙ্গধ্বনি’র শোভাযাত্রায় এবার পা মেলালেন জঙ্গিপুর পুরসভার প্রশাসক মোজাহারুল ইসলাম এবং তাঁর অনুগামীরা। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, আর কয়েক মাস পরেই বিধানসভা ভোট। এই সময় দলীয় নেতাদের ‘কোন্দল’ মিটিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোর (পিকে)র দলের পক্ষ থেকে ফোন করে পুর প্রশাসককে ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, দ্বন্দ্ব না মেটালে তাঁকে সরতে হতে পারে। সেজন্যই তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে মিছিলে পা মেলালেন বলে অনুমান।
দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গিপুরে তৃণমূলে গোষ্ঠী-কোন্দল অব্যাহত। সূত্রের খবর, জাকিরের সঙ্গে কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধ মোজাহারুল এবং তাঁর অনুগামীদের। মন্ত্রীর সঙ্গে পুর প্রশাসকের বিরোধ বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। একাধিকবার শহরের পুর পরিষেবা নিয়ে পুরকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন জাকির। এমনকি, নিজেই অর্থ দিয়ে লোক লাগিয়ে সাফাইয়ের কাজ করেও পুরসভার ব্যর্থতা বাসিন্দাদের চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। দু’পক্ষই একে অন্যের দলীয় কর্মসূচি এড়িয়ে চলেছেন এতদিন। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষও ঘটেছে একাধিক বার। বিরোধ থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে বিরোধ মেটেনি। তবে তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় জঙ্গিপুরের পুর প্রশাসককে ফোন করেন পিকে’র দলের সদস্যরা। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচিতে মন্ত্রীর সঙ্গে থাকতে হবে তাঁদেরও। প্রথমে রাজি না হলেও পরে ওই নির্দেশ মেনে নিতে কার্যত বাধ্য হন তিনি।
তবে মোজাহারুল শনিবার অবশ্য দাবি করেন, ‘‘কে বলল, ওঁর (জাকির) সঙ্গে আমার ঝগড়া। নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় সব অনুষ্ঠানে সকলে যোগ দিতে পারতাম না। পিকে টিমের ফোন তো নিয়মিতই আসে। দলের সকলেই চাইছিলেন, অনুষ্ঠানে আমরা যোগ দিই। তাই গিয়েছি।’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি একটা ছিল। তা মিটে গিয়েছে।’’ আর জাকিরও বলছেন, ‘‘নেত্রীর নির্দেশে দলকে শক্তিশালী করাই এখন লক্ষ্য।’’তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট কিছুটা শক্ত হচ্ছে জেলায়। জঙ্গিপুর নিয়ে তাই কিছুটা চিন্তা আমাদের বেড়েছে। বিজেপি-ও এখানে গত লোকসভায় ভাল ভোট পেয়েছে। এই অবস্থায় দলীয় নেতারা কোন্দলে জড়িয়ে পড়লে এই আসন জেতা আরও কঠিন হবে।’’ তবে দলের দুই প্রথমসারির নেতার ‘কাজিয়া’ আপাতত মেটায় স্বস্তিতে কর্মীরা।