প্রহৃত সঞ্জয় বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে দলেরই নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের এক অঞ্চল যুব সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ধানতলা থানার বহিরগাছি অঞ্চলের তৃণমূলের যুব সভাপতি তারক ঘোষ ও তাঁর দুই সহযোগী শুভেন্দু বিশ্বাস ও সায়ন ঘোষকে ইতিমধ্যে দোকান ভাঙচুর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার অভিযুক্তদের রানাঘাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে রানাঘাট-২ ব্লক এলাকায় যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল। এলাকায় তাদের দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বও তুঙ্গে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগও দায়ের হয় সে দিন রাতেই। তৃণমূল সূত্রের খবর, ধানতলা থানার বহিরগাছিতে বৃহস্পতিবার রাতে বহিরগাছি অঞ্চল তৃণমূলের যুব সভাপতি তারক ঘোষের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের সুজিত রায়ের ছেলে সৌভিক রায়ের প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে ঢুকে ভাঙচুর করা হয় ও সৌভিককে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওই এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি সঞ্জয় বিশ্বাসের দোকানও ভাঙচুর হয় এবং তিনিও মার খান। রাতেই ধানতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সৌভিকের মা সবিতা।
তারক পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনার করেছেন রানাঘাট-২ ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্য ফিরোজ আলি মণ্ডল-সহ পাঁচ জন। এ দিন গ্রেফতার হওয়ার আগে তারক সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক জনপ্রিয়তায় ওরা আমার থেকে পিছিয়ে রয়েছে। তাই আক্রোশ মেটাতে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল। বিষয়টি আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’’
আক্রান্ত তৃণমূল নেতা সৌভিক রায় অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমার মা এবং বাবা দু’জনেই প্রাক্তন প্রধান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল দল করি। তাই আক্রোশ তৈরি হয়েছে যুব তৃণমূল নেতা তারক ঘোষের। বেশ কয়েক বার আমার উপরে চড়াও হয়েছিল তারক। বৃহস্পতিবার রাতেও আমার দোকান ভাঙচুর চালিয়েছে, আমাকে মারধর করেছে।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তারক। বর্তমানে তিনি রানাঘাট ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রাজেশ ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের মারধর ও হুমকির অভিযোগ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট-২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রাজেশ ভৌমিককে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোনতোলেননি। ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা কথা স্বীকার করলেও গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রেরপ্রাক্তন বিধায়ক সমীরকুমারপোদ্দার।