জখম নেতা। নিজস্ব চিত্র
ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জঙ্গিপুরে শাসক দল তৃণমূলে। তার জেরে চলল গুলি। গুরুতর আহত তৃণমূল নেতাকে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য সহ ৬ জনের নামে গুলি করে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
রবিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে বাইক থামিয়ে ওই তৃণমূল নেতার উপরে গুলি চালানো হয়। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেও ডান পায়ে গভীর ক্ষতের কারণে তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছে। ওই তৃণমূল নেতার নাম শেষান দাস। রঘুনাথগঞ্জের একটি সিমেন্ট কারখানায় কাজ করেন তিনি। সেই সূত্রে কারখানায় তৃণমূলের ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের এক গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত। বাড়ি কারখানা লাগোয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে। অভিযুক্তরাও ওই সিমেন্ট কারখানার তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর নেতা। তাদের মধ্যে মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূলের সদস্যও রয়েছেন।
ওই সিমেন্ট কারখানাতে কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ রয়েছে। সেই বিবাদ থেকে এর আগেও সংঘর্ষ ঘটেছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু গুলি চলেনি কখনও।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ সদস্যের মির্জাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২ জন সদস্য অনাস্থা এনেছেন প্রধান টুকটুকি মণ্ডলের বিরুদ্ধে। রবিবার বিকেলে রঘুনাথগঞ্জে দলের জেলা অফিসে সেই অনাস্থা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান। ছিলেন বিধায়ক কানাই চন্দ্র মণ্ডলও। সেখানে হাজির ছিল শেষানও। ছিলেন তৃণমূলের অভিযুক্ত নেতারাও। সন্ধ্যে নাগাদ তাদের বৈঠক শেষ হয়। সকলেই যে যার মতো বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু শেষান বাড়ি না ফিরে পাশেই মির্জাপুর গ্রামে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেন। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেখান থেকে তার মোটর বাইক নিয়ে দক্ষিণপাড়া গ্রামে তার বাড়িতে ফিরছিলেন।
শেষান বলেন, “গণকর মোড়ের কাছে আমার বাইকের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে থামতে বলে জনা দশেক লোক। আমি থামি। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। তার মধ্যেই তাদের ছোড়া একটি গুলি এসে লাগে আমার ডান পায়ে। ওই অবস্থাতেই প্রাণ ভয়ে বাইক ফেলে আমি ছুটতে শুরু করি অন্ধকারের মধ্যে। আর একটি গুলি চালালেও তা আমার গায়ে লাগেনি। দুষ্কৃতীরা ওই সিমেন্ট কারখানারই কর্মী। তাদের কয়েক জনকে আমি চিনতে পেরে পুলিশকে জানিয়েছি।”
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনই ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, ‘‘বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। দলের নেতারাও দেখছেন। এখনই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছি না।’’