প্রতীকী ছবি।
প্রাক্তন পুরপ্রধান দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সেই দলবদলের ধাক্কা সামলে এখন নিজেদের ঘর গোছানোতেই মন দিচ্ছেন রানাঘাটের তৃণমূল নেতারা।
প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বিধায়কের সঙ্গী হবেন আর কে কে, সেদিক নজর ছিল শাসক দলের। কিন্তু এখনও আর সে রকম বড়সড় ভাঙন কিছু হয়নি। ২০১০ সালে কংগ্রেসের তৎকালীন গড় রানাঘাটে প্রথম বার ভোটে জিতে পুরসভার ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তার আগের বছরেই অবশ্য পালাবদল ঘটে গেছে নদিয়ার এই গুরুত্বপূর্ন রেল জংশনে। ২০০৯ সালের শেষ দিকে পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় ১৫ জন কাউন্সিলরকে সঙ্গী করে কংগ্রেসের হাত ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
২০১০ সালের পুরভোটের পরের বছর বিধানসভা ভোটেও রানাঘাটে ভাল ফল করে তৃণমূল। শুধু তা-ই নয়, বিধায়ক নির্বাচিত হন পার্থসারথী। ২০১৫ সালের পুরভোটে রানাঘাটে তৃণমূল ক্ষমতায় এলেও দীর্ঘদিন পর কাউন্সিলর জিতিয়ে আনে বামেরা। সেই ভোটে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেতে হয় শাসক দলকে। ২০১৬ সালের ভোটে রানাঘাট শহরে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ফুটেছে পদ্ম। আর এ বারের বিধানসভা ভোট যখন দুয়ারে, সেই সময়েই রানাঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূল ছেড়ে চলে গেলেন বিজেপিতে। সোমবারই প্রাক্তন কাউন্সিলর কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুর প্রশাসক পর্ষদের চেয়ারপার্সন পদে বসানো হয়েছে। দলবদলের ক্ষত মেরামত করে ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করাও চ্যালেঞ্জ শাসক দলের কাছে।
রানাঘাটের তৃণমূল নেতাদের দাবি, প্রাক্তন কাউন্সিলরদের মধ্যে এখনও সে ভাবে ভাঙন ধরাতে পারেনি বিজেপি। পার্থসারথী যে চলে যাবেন, তা ক্রমে তাঁদের কাছে স্পষ্ট হচ্ছিল। ফলে গুছিয়ে নেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে নেতাকর্মীদের মন বুঝে নেওয়ার পাশাপাশি নিচুতলায় সরাসরি সংযোগ স্থাপনের পথ বেছে নিচ্ছেন তারা। পদত্যাগী পার্থসারথীর দাবি, “অনেকেই যোগাযোগ করছে। তবে তৃণমূল নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আটকাচ্ছে।”
ফলে দলের কেউ তাঁ বা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কি না সেটাও বুঝে নেওয়ার পালা এখন শাসক দলে। দীর্ঘদিন পুরসভার কর্তৃত্বে থাকায় শহরে এবং বিধায়ক থাকায় আশপাশের গ্রামীণ এলাকায় পার্থসারথীর ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মী যেমন ছিলেন, তেমন বহুল পরিচিতিও তৈরি হয়েছিল। তৃণমূলে বছর দশেক কাটানোর ফলে দলের অন্দরমহলের কৌশলও তাঁর চেনা। তৃণমূলের নেতারা পাল্টা বলছেন, ওঁর কাজকর্ম বা পরিকল্পনার সঙ্গে তাঁরাও তো পরিচিত।
রানাঘাট শহর তৃণমূলের সভাপতি পবিত্র ব্রহ্মের দাবি, “উনি চলে যাওয়ায় রানাঘাটের মানুষ হাঁফ ছেড়েছেন। নিচুতলার নেতাকর্মীরা সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে আছেন।”