—প্রতীকী চিত্র।
যে সব পুরসভা কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দলের ফলাফল খারাপ হয়েছে, সে সব এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে রবিবার কলকাতায় ধর্মতলায় ‘শহিদ সমাবেশ’ থেকে জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই মন্তব্যের পর থেকে মুর্শিদাবাদে অধিকাংশ পুরসভা এবং বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে কাঁপন ধরা শুরু হয়েছে।
কারণ মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল তিনটি লোকসভা আসনে এবং ভগবানগোলা বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হলেও মুর্শিদাবাদের আটটি পুরসভার মধ্যে সাতটি পুরসভা এলাকায় তাদের ফল খারাপ করেছে। শুধু তাই নয়, বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের থেকে কংগ্রেস, সিপিএম বা বিজেপি ভোট বেশি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এ বারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সেই এলাকায় দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শহর সভাপতি বা অঞ্চল সভাপতিদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে দলের অন্দরে হইচই শুরু হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, শহর ও অঞ্চল সভাপতিদের হইচই শুরু হয়েছে।
জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার পুরপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি এবং আমাদের কাউন্সিলররা মনপ্রাণ দিয়ে দলের প্রার্থীর হয়ে ভোট করেছি। আমাদের প্রার্থী যত বেশি ভোট পান তার চেষ্টা করেছি। তার পরেও ফল এ রকম হয়েছে। দল যে নির্দেশ দেবে তা মেনে চলব।’’ রবিবার একই কথা বলেছিলেন বহরমপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়।
পুরসভা ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচনের ফলাফল এবং এ বারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যাচ্ছে বড় তফাৎ রয়েছে। জেলার ৮টি পুরসভা তৃণমূলের দখলে রয়েছে। অথচ লোকসভা ভোটের নিরিখে এ বারে সাতটি পুরসভায় তৃণমূলের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। জঙ্গিপুর পুরসভার মোট ওয়ার্ড ২১টি। সেখানে ২০২২ সালের পুরভোটে তৃণমূল ১৫টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল এবং এ বারে লোকসভা ভোটে মাত্র ১টি ওয়ার্ডে তৃণমূল লিড পেয়েছে। ধুলিয়ান পুরসভার মোট ওয়ার্ড ২১ টি। সেখানে ২০২২ সালের পুরভোটে তৃণমূল ১১টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেখানে মাত্র একটি ওয়ার্ড তৃণমূল লিড পেয়েছে। আবার কান্দি পুরসভার মোট আসন ১৮টি। ২০২২ সালের পুরভোটে সেখানে তৃণমূল ১৬টি আসনে জয়ী হয়েছিল। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেখানে মাত্র পাঁচটি ওয়ার্ডে তৃণমূল লিড পেয়েছে। তেমনই মুর্শিদাবাদ পুরসভার মোট আসন ১৬টি। সেখানে ২০২২ সালের পুর নির্বাচনে তৃণমূল ৯টি ওয়ার্ডে জয় লাভ করেছিল। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেখানে মাত্র তিনটি ওয়ার্ডে তৃণমূল লিড পেয়েছে।
জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পুরসভার মোট ওয়ার্ডে ১৭টি। সেখানে ২০২২ সালের পুরভোটে তৃণমূল ১৫টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। এবারের লোকসভা ভোটে সব ক’টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বহরমপুর পুরসভার মোট আসন ২৮টি। ২০২২ সালের পুরভোটে সেখানে ২২টি আসনে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। এ বারে সব কটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বেলডাঙা পুরসভার মোট ওয়ার্ড ১৪টি। ২০২২ সালের পুরভোটে তৃণমূল ৭টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিল। এবারে লোকসভা নির্বাচনে সেখানে মাত্র দু’টি ওয়ার্ডে তৃণমূল লিড পেয়েছে। এক মাত্র ডোমকলে তৃণমূল ভাল ফল করেছে। লোকসভা নির্বাচনে ১৭টি ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল।