রাস্তা দিয়ে হাটছিলেন তিন ব্যক্তি। এলাকায় অপিরিচিত। ডাকাত সন্দেহে তাঁদের আটকে রাখল গ্রামের বাসিন্দারা। জমে গেল শ’ চারেক লোক। তাদের উদ্ধার করতে এসে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হল পুলিশকে।
সোমবার রাতে হরিণঘাটার গোয়ালডোব গ্রামের ঘটনা। আটক তিন জনকে উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে উদ্ধার করে তিন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। তাঁরা হাবরা থানা এলাকার বাসিন্দা। ব্যক্তিগত কাজে গোয়ালডোব এলাকায় এসেছিলেন। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত দু’ সপ্তাহ ধরে হরিণঘাটা লাগোয়া কল্যাণী ও চাকদহ থানা এলাকায় পর পর পাঁচটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হরিণঘাটার বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশ প্রচার করেছে, অচেনা লোক এলাকায় দীর্ঘ সময় ঘোরাঘুরি করলে থানায় খবর দিতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোবার রাত আটটা নাগাদ তিন প্রৌঢ় গোয়ালডোবের রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। সেই সময় স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা তাঁদের একটি দোকানে এনে জেরা শুরু করে। তাঁদের বাড়ি হাবরার কুমারথুবা জেনেই শুরু হয় মারধর। কেন তাঁরা এত দূরে এসেছেন, সেই প্রশ্ন চলতে থাকে সমানে। এরই মধ্যে প্রচুর লোক জড় হয়ে যায়।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আটক তিন জনকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁদেরও হেনস্থা করে জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে জনতা পুলিশ কর্মীদের বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে এগোতে চাইলে জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়়তে শুরু করে। জনতার আক্রমণে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কিছুক্ষণ পরে হরিণঘাটা থানার আইসি-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। প্রথমে তাদেরও বাধার মুখে পড়তে হয়। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গেলে পিছু হটে জনতা। তিন জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনের বাড়ি হাবরার কুমারথুবায়। তাঁরা তিনজনেই ব্যবসায়ী। পুলিশকে তাঁরা জানান, দোকান বন্ধ করে তাঁরা ওই এলাকায় কাজে এসেছিলেন।
হরিণঘাটার পুলিশ হাবরা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। গভীর রাতের হাবরা থানা জানিয়ে দেয়, তিন জন ঠিক কথাই বলেছেন। স্থানীয় থানাতেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। রাতে তিন জনের বাড়ির লোকেরাও হরিণঘাটা থানায় পৌঁছন। মঙ্গলবার সকালে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।