Death Case

স্বামীর ঝুলন্ত দেহের পাশে পড়ে স্ত্রী এবং পাঁচ বছরের সৎমেয়ের দেহ! কী ভাবে মৃত্যু? বহরমপুরে চাঞ্চল্য

ভাড়াবাড়ির সিলিং ফ্যান থেকে যুবকের দেহ ঝুলছিল। তাঁর স্ত্রী ও সৎকন্যার দেহ পড়েছিল খাটের উপর। পুলিশের অনুমান, সুজয় তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ১১:৫৫
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল প্রথম স্বামীর। তার পর থেকে তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। একমাত্র কন্যাসন্তানকে নিয়ে এক যুবকের সঙ্গে নতুন করে সংসার শুরু করেছিলেন এক মহিলা। শনিবার বহরমপুরের কুঞ্জঘাটায় ভাড়াবাড়ি থেকে ওই দম্পতি এবং শিশুকন্যার নিথর দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানা এলাকার ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র তিন দিন আগে ওই ভাড়াবাড়িতে উঠেছিলেন সুজয় মণ্ডল (৩৫) এবং তাঁর স্ত্রী শোভা ঘোষ (২৭)। রবিবার সকালে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ বাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেন। উদ্ধার হয় শোভার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা আরাধ্যা ঘোষের দেহ। খুন না কি আত্মহত্যা, মৃত্যুর নেপথ্যে কারণ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ভাড়াবাড়ির সিলিং ফ্যান থেকে সুজয়ের দেহ ঝুলছিল। তাঁর স্ত্রী ও সৎকন্যার দেহ পড়েছিল খাটের উপর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সুজয় তাঁর স্ত্রী ও পাঁচ বছরের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। যদিও তদন্ত এখনও বাকি বলে জানাচ্ছে তারা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, দাম্পত্য কলহের কথা। সুজয় এবং শোভার মধ্যে নাকি প্রায়শই অশান্তি হত। প্রথম পক্ষের কন্যাকে নিয়েই ওই গন্ডগোল। পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, শোভার উপার্জনেই সংসার চলত। সুজয় তেমন কোনও কাজকর্ম করতেন না। তদন্তকারীদের অনুমান, আর্থিক অনটন, সম্পর্কে জটিলতা থেকে স্ত্রী এবং সৎকন্যাকে খুন করে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মৃতা শোভার বাবা শিবনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমার মেয়ে অল্প বয়সে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল। দু’বছর আগে দুর্গাপুজোর সময় ওর স্বামীর মৃত্যু হয়। মেয়ের কন্যাসন্তান ছিল। পরে এই ছেলেটিকে (সুজয়) ভালবাসে বিয়ে করে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘জামাই কী করত, আমরা খুব একটা কিছু জানতাম না। কুঞ্জঘাটা এলাকায় যে ওরা বাড়িভাড়া করে ছিল, সেই খবরও ছিল না। আজ (রবিবার) সকালে এক পরিচিত ফোন করে জানায় মেয়ে, জামাই ও নাতনির দেহ উদ্ধার হয়েছে। আমি গিয়ে দেখি মেয়ে আর নাতনির দেহ পড়ে আছে ঘরে খাটের উপরে। জামাইয়ের দেহ তখনও ঝুলছিল সিলিং ফ্যান থেকে দড়ি বাঁধা অবস্থায়।’’ মৃতার ভাই সঞ্জিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘দিদির প্রথম বিয়ে হয় বহরমপুরের ক্ষুদিরাম পাঠাগারের কাছে। পথ দুর্ঘটনায় জামাইবাবুর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে দিদি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত না। একাই মেয়েকে নিয়ে থাকত। মাঝে একটা বিয়ে করে। এখন পুরো পরিবারটা শেষ হয়ে গেল!’’ অন্য দিকে, তিন জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদবের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement