উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে ফের মুঙ্গের যোগ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া রেল স্টেশনে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার হয়েছে তিন অস্ত্র কারবারি। তাদের মধ্যে একজন শ্রীলাল মণ্ডল বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। অপর দু'জন সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। তাদের একজন সুদীপ খানের বাড়ি হরিহরপাড়ার সাহাজাদপুর ও অপর জন কাউসার শেখের বাড়ি নওদার গঙ্গাধারী গ্রামে। তবে গত কয়েক বছর ধরে কাউসার হরিহরপাড়ার গজনীপুরে বসবাস করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া রেল স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি আধুনিক সেভেন এমএম পিস্তল, ছ'টি ম্যাগাজিন ও ১৪ রাউন্ড গুলি। ধৃতদের মঙ্গলবার কাটোয়া আদালতে তোলা হয়েছে। তাদের আট দিনের পুলিশ হেপাজতে নিয়ে এই চক্রে আর কে বা কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউসার ২০১৮ সালে মাদক মামলায় জড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ বছর সে বহরমপুর সংশোধনাগারে ছিল। গত জানুয়ারি মাসে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে। রেল পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, জেল বন্দি থাকাকালীন জেলের ভিতরেই ফাইম খান নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় কাউসারের। ফাইম বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই ফাইমের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাউসার। চারটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ম্যাগাজিন সহ গুলি কেনার জন্য ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা ফাইমকে দেয় কাউসার।
শ্রীলাল নামের ওই অভিযুক্ত মুঙ্গের থেকে ট্রেনে করে কাটোয়া স্টেশনে এসেছিল আগ্নেয়াস্ত্র হস্তান্তরের জন্য। পুলিশ জানিয়েছে ইতিমধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র গুলি হাতবদলও হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশের এসটিএফ (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) ও রেল পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র সহ ওই তিন কারবারিকে গ্রেফতার করেছে।
ধৃত সুদীপের বিরুদ্ধে এর আগেও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, আগ্নেয়াস্ত্রগুলি নিয়ে এসে এলাকায় বিক্রির ছক ছিল তাদের। মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এই চক্রে আর কারা জড়িত রয়েছে তার তদন্ত চলছে।" সম্প্রতি হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল সহ মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার একাধিক থানা এলাকায় একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে ফের মুঙ্গের যোগ ভাবিয়ে তুলেছে জেলা পুলিশকে।