লুঠের পর ফ্রিজ খুলে মিষ্টিমুখ চোরেদের

এতটা পথ। তা-ও সারারাত বাসে না ঘুমিয়ে। শরীরটা আর দিচ্ছিল না। ভাল ছিল না মন-মেজাজও। বড় মেয়েটা আগেই চলে গিয়েছে, এ বার ছোটটারও বিয়ে হয়ে গেল।

Advertisement

সৌমিত্র সিকদার

চাকদহ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ০২:১৯
Share:

এতটা পথ। তা-ও সারারাত বাসে না ঘুমিয়ে। শরীরটা আর দিচ্ছিল না। ভাল ছিল না মন-মেজাজও। বড় মেয়েটা আগেই চলে গিয়েছে, এ বার ছোটটারও বিয়ে হয়ে গেল।

Advertisement

সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে বাড়ির সামনে আসতেই চক্ষু চড়কগাছ। তালা ভাঙা। সদর দরজা হাট করে খোলা। লন্ডভন্ড ঘর। খোলা আলমারিও। মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে জামা-কাপড়, উপহারের খালি প্যাকেট, এমনকী মিষ্টির বাক্সগুলো পর্যন্ত! তবে বলাই বাহুল্য ফাঁকা। রাতবিরেতে যারা এসেছিল, তারা বিয়েতে আসা মিষ্টিগুলো খেয়ে যেতে ভোলেনি।

শনিবার চাকদহ থানার শিমুরালি সুতারগাছি গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় ব্যবসায়ী নিমাইচাঁদ দত্তের ছোট মেয়ের বিয়ে ছিল বুধবার। শ্বশুরবাড়ি কলকাতার বাঁশদ্রোনিতে। শুক্রবার বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল কনেযাত্রী। বাড়িতে ছিলেন না কেউ। যাতায়াতেই সারা রাত কেটে যায়। শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন নিমাইবাবুরা। আর পা ফেলেই টের পান অনাগত অতিথিদের কথা।

Advertisement

শিমুরালি বাজারে হার্ডওয়ারের দোকান নিমাইবাবুর। তাঁর দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে আগেই হয়ে গিয়েছে। বুধবার ছিল ছোট মেয়ের বিয়ে। বারান্দায় বসে কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে নিমাইবাবু বললেন, “রাত তিনটে নাগাদ বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তায় জ্যাম থাকায় ঘণ্টা দুয়েক দেরি হয়ে যায়। এসে দেখি এই অবস্থা।’’ পরে আক্ষেপের সুরে তাঁর স্ত্রী চন্দনা দত্ত বলেন, “আমাদের ঘরের জিনিস তো নিয়েইছে, আত্মীয়দের ব্যাগগুলো পর্যন্ত খুলে দেখেছে। সোনার গয়না, নগদ টাকা, নতুন শাড়িও— সব নিয়ে গিয়েছে। এমনকী বিয়েতে পাওয়া উপহারগুলোও।”

কিন্তু সারারাত দাপিয়ে বেড়াল চোরের দল, আর পাড়াপ্রতিবেশী ঘুণাক্ষরেও টের পেল না কেউ! নিমাইবাবুর কথায়, ‘‘সারারাত এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। সেই সুযোগটাই নিয়েছে চোরেরা।” সকালে ঘটনার কথা শুনে হাহুতাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দা রাম নন্দীও। বললেন, ‘‘অবাক হয়ে যাচ্ছি। এত কিছু ঘটে গেল, একবারের জন্যও টের পেলাম না।’’ পুলিশের বক্তব্য, বাড়ি ফাঁকা পেয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে চোরের দল। তবে কি চোরেরা আগে থেকেই জানত, ওই রাতে বাড়ি ফাঁকা থাকবে? বাড়ির চেনাপরিচিত কেউ খবর দিয়েছিল? এখনই মুখ খুলতে নারাজ পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তারা শুধু জানিয়েছে, নগদ টাকা, গয়না, বিয়েতে পাওয়া উপহার, কিছুই ফেলে যায়নি চোরেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement