সিসি-ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া।
বেশ কয়েক মাস চুপচাপ থাকার পর ফের বড়-সড় চুরির ঘটনা ঘটল নবদ্বীপ শহরে। মঙ্গলবার রাতে নবদ্বীপ রানির চড়া মেন রোডের উপরে একটি চানাচুর কারখানার অফিসে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। একাধিক দরজা এবং তালা ভেঙে বেশ কয়েক হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তার আগে কারখানার চার দিকে বসানো সিসি-ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা যায়নি।
নবদ্বীপ পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের ঘনবসতিপূর্ণ রাণির চড়ায় ওই চুরির ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার ছিল কারখানার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। সেই সঙ্গে দিনভর বৃষ্টি। সুযোগের সদ্বব্যবহার করে ওই দুষ্কৃতী দল। বুধবার কর্মীরা কাজে এসে বিষয়টি দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কারখানা মালিক দুই ভাই প্রবীর বণিক এবং সুবীর বণিক। তাঁরা নবদ্বীপ অঞ্চলে বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের ডিস্ট্রিবিউটর। রানির চড়া মেন রোডের উপর ওই একই বাড়ির একতলায় চানাচুর কারখানা এবং দোতলায় পরিবেশক সংস্থার অফিস। মঙ্গলবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে, বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে লোকজন এমনিতেই কম ছিল। সুনসান রাতে কারখানার পিছন দিক দিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। প্রথমে একটি গ্রিলের দরজার তালা ভেঙে ঢুকে ভিতরের বিভিন্ন স্থানে বসানো সিসি-ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেয়। এর পর ভিতরের কাঠের দরজা, তালা, ইন্টারলক একে একে ভেঙে ফেলে।
সিসি-ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজ থেকে জানা গিয়েছে, যখন দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢোকে তখন ঘড়িতে রাত ১.৪০ মিনিট। অফিস ঘরের ভিতরের চালু সিসি-ক্যামেরায় নীল চেক লুঙ্গি দিয়ে মাথা মুখ বাঁধা দু’জনকে ঘরের ভিতরের দেখা যায়। তারাই আলমারি, ড্রয়ার ভেঙে চুরি করে। কিছু ক্ষণ পরে তারা ঘরের ভিতরে সিসি ক্যামেরাগুলি দেখতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে সেই ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেয়। তাই রাত ২.২০ মিনিটের পর আর কোনও ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
বড় ভাই প্রবীর বণিক এ দিন বলেন, “ক্যাশের আলমারিতে কুড়ি হাজার টাকা ছিল। খুচরো টাকা ছিল বত্রিশ হাজার। সব নিয়ে গিয়েছে।”
এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। চুরির ধরন দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, পরিচিত কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তালা ভাঙা, ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া বা নির্দিষ্ট আলমারি এবং ড্রয়ার ভেঙে টাকা সরানোর মধ্যে সে ইঙ্গিত মিলছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
গত ডিসেম্বরে প্রাচীন মায়াপুরে এক সেনা জওয়ানের বাড়িতে চুরির পর শহরে তেমন বড়সড় চুরির ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, এত দিন সুযোগের অপেক্ষায় ছিল দুষ্কৃতীরা। বৃষ্টি নামতেই তাই ফের চুরির ঘটনা।