জমিদখল করে অবৈধ নির্মাণ। শুক্রবার। ছবি: সুদেব দাস।
গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে মেলেনি নির্মাণ কাজের অনুমোদন। তা সত্ত্বেও চলছে অবৈধ নির্মাণ। পঞ্চায়েতের তরফে অভিযুক্তদের কাজ বন্ধের নোটিস দেওয়া হলেও নোটিস নিতে অস্বীকার করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে বিডিও-কে বিষয়টি লিখিত আকারে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। ওই অবৈধ নির্মাণের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী ও ভাসুরের। জমি ফিরে পেতে এবং অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধে আর্জি জানিয়ে শেষ পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানিয়েছেন জমির মালিক।
রানাঘাট-১ ব্লকের অধীনে রয়েছে রামনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঘবপুর এলাকা। এলাকার বাসিন্দা সুরজিৎ পালের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী তথা শাসকদলের ঘনিষ্ঠেরা আমার পৈত্রিক সম্পত্তি সাত কাঠা জমি জবরদখল করেছে। ওই জমিতে চলছে অবৈধ নির্মাণ।’’ বিষয়টি নিয়ে ওই যুবক নদিয়া জেলাশাসক, রানাঘাটের মহকুমা শাসক, বিডিও, স্থানীয় পঞ্চায়েত, ব্লক ভূমি ও সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন।
অভিযোগ, রাঘবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের কাকলি বিশ্বাসের স্বামী বিপ্লব বিশ্বাস ও তাঁর দাদা বিকাশ বিশ্বাস-সহ বেশ কয়েক জন এলাকায় অবৈধ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ওই জমি পরিদর্শনের কাজ হয়। এর পর অভিযুক্তদের কাজ বন্ধে নোটিস ধরাতে চায় পঞ্চায়েত। কিন্তু সেই নোটিস নিতে অস্বীকার করেন অভিযুক্তেরা। বিষয়টি নিয়ে রামনগর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান চুমকি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই কাজের জন্য আমরা অনুমোদন দিইনি। তবে অভিযুক্তেরা পূর্বতন পঞ্চায়েত বোর্ডের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন বলে দাবি করছেন। বিষয়টি বিডিও-কে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, রানাঘাট ১ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রানাঘাট ১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অমিয়কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিডিও-র তরফে অভিযোগ আমাদের কাছে আসার পরেই কাজ বন্ধের নির্দেশ জারি করেছি। তদন্ত করা হচ্ছে।’’
যদিও ওই নির্মাণ কাজ অবৈধ নয় বলে দাবি করেছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের ভাসুর বিকাশ বিশ্বাস। তাঁর দাবি, ‘‘নিয়ম মেনেই কাজ চলছে। আমাদের কাছে কাগজপত্র রয়েছে। তবুও মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
আগামী ১০ জুলাই উপনির্বাচন। তার আগে জমিদখল করে অবৈধ নির্মাণের বিষয়টি সামনে আসায় সরব হয়েছে বিজেপি। নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে এই ধরনের জমিদখল বা অবৈধ নির্মাণ কাজ চলছে। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েই তৃণমূল এই কাজ করছে।’’