‘সবক’ শেখানোর সভায় কোঁদলের মেঘ

সভার গায়ে যে তকমাই লাগিয়ে দেওয়া হোক, শনিবার ভরতপুরের  মাঠে জেলা তৃণমূলের সভা নিয়ে চাপা  অসন্তোষ এবং উত্তেজনা দুই রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভরতপুর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৪
Share:

তৃণমূলের জেলা নেতারা আড়ালে আবডালে বলছেন, সভাটা নিছক ব্যক্তিগত আস্ফালন মেটানোর, কংগ্রেস পাল্টা দাবি করেছে— এ হল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সভা, হুমকির সভাও বলতে পারেন!

Advertisement

সভার গায়ে যে তকমাই লাগিয়ে দেওয়া হোক, শনিবার ভরতপুরের মাঠে জেলা তৃণমূলের সভা নিয়ে চাপা অসন্তোষ এবং উত্তেজনা দুই রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।

অসন্তোষের মূল কারণ, ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকে সভার আয়োজন করা হলেও আয়োজক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ ভরতপুর ২ নম্বর ব্লকের নেতাদের। তা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। বিবাদের প্রশ্ন নেই বলে সরকারি ভাবে বার্তা দেওয়া হলেও দুই ব্লকের নেতাদের মধ্যে যে চাপা রেষারেষি শুরু হয়ে গিয়েছে, ভরতপুর ১ নম্বর ব্লক নেতাদের সঙ্গে কথা বললেই তা ধরা পড়ছে। এ দিনের সভায় ওই ব্লক থেকে নেতারা কেমন লোক আনবেন তা নিয়েও চাপা সন্দেহও ঘুরছে ভরতপুর জুড়ে।

Advertisement

দলের ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি নূর আলম মুখে অবশ্য বলছেন, ‘‘না না কোনও ক্ষোভ নেই। নেতারা যেখানে মনে করেছেন, যাকে পছন্দ করেছেন তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি তো কথা দিয়েছি হাজার তিরিশ লোক পাঠাব।’’ সভার দায়িত্ব যাঁর উপরে বর্তেছিল ভরতপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মহম্মদ আজাহারউদ্দিন সিজার বলছেন, ‘‘শুভেন্দুদা বলেছিলেন বলেই সভার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছি। ১ নম্বর ব্লক থেকে কত জন আসবেন জানি না, তবে আমি হাজার পঁচিশ লোক আনব। ৫০টা বাস আর হাজার দুয়েক মোটরবাইকও থাকবে, সভা একাই জমিয়ে দেব, মিলিয়ে নেবেন।’’

ব্লকের দুই নেতার কথায়, সুক্ষ্ম একটা রেষারেষির আঁচ খুঁজছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। ভরতপুরের দুই নেতার কথা শুনুন, তা হলেই বুঝতে পারবেন সভার মূল লক্ষ্য কংগ্রেসকে সবক শেকানো নাকি দলের কোঁদল সামলানো!’’

দিন কয়েক আগে, বিধানসভায় বড়ঞার কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্নবানে কোণঠাসা করতেই ক্ষমা চাইতে হবে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই অবশ্য থামেননি, কটাক্ষ ছিল— ‘মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস সাফ হয়েছে। পরের বিধানসভা ভোটে বাকি যারা আছে সকলেই তৃণমূলে আসবে।’ তারই প্রতিবাদ করে পরিবহণমন্ত্রীর দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায়। বিবাদের সূত্রপাত সেখানেই। তার জেরেই কমলেশের বাড়ির দুশো মিটারের মধ্যে সভা করে পাল্টা চাপ দিতে চেয়েছেন শুভেন্দু বলে দলীয় সূত্রে খবর।

আজ শনিবার সেই সভা। তবে সভার আয়োজক হিসেবে ২ নম্বর ব্লকের আজহারকে দায়িত্ব দেওয়ায় ‘অভিমান’ হয়েছে ভরতপুর ১ নম্বর ব্লকের নেতা-কর্মীদের। তাই কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে চেনা কোন্দলের জাঁতায় পড়েছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement