চড়ল গোলাপের দাম। প্রতীকী চিত্র।
রোজ ডে-তে গোলাপে হাত দিলেই বিঁধছে কাঁটা। গত বারের থেকে অনেকটাই চড়েছে গোলাপের দাম। এখনই যদি গোলাপের দাম এমন হয় তা হলে ভ্যালেন্টাইন্স ডের মাহেন্দ্র ক্ষণে তা কোথায় পৌঁছছে তা নিয়ে আশঙ্কা অনেকেরই।
নদিয়া জেলার রানাঘাট, ধানতলা, শিমুলতলা, চাপড়া, বেথুয়াডহরির বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ হয় গোলাপের। হাওড়া, কলকাতা এবং উত্তরবঙ্গের পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে নদিয়ার গোলাপ পৌঁছে যায় সারা রাজ্যে। এমনকি তা পৌঁছয় বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ অথবা দিল্লিতেও। মঙ্গলবার নদিয়ার একাধিক ফুলবাজারে প্রতিটি দেশি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়। একই ছবি রানাঘাট, বাদকুল্লা, কৃষ্ণনগরের ফুলবাজারেও। ভ্যালেন্টাইন্সের সপ্তাহে বিশেষ আকর্ষণ লম্বা ডাঁটিওয়ালা বিশেষ প্রজাতির (চায়না) গোলাপ। যা সাধারণত আসে বেঙ্গালুরু থেকে। এ বার সেই গোলাপের দামও বেশ চড়া। গত বছর যেখানে প্রতিটি চায়না গোলাপের দাম ছিল ৬০ টাকা। এ বার তা বিকোচ্ছে একশো টাকারও বেশি দামে।
চলতি বছরে গোলাপের এই মূল্যবৃদ্ধিই কাঁটা ছড়িয়েছে প্রেমের পথে। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে গোলাপ কিনতে আসা কলেজ পড়ুয়া রত্নদ্বীপ রায়ের কথায়, ‘‘হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে গোলাপ কিনতে হয়। বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে ইচ্ছাকৃত ভাবে দ্বিগুণ দাম নিয়ে আমাদের অসহায়তার সুযোগ নিচ্ছে দোকানিরা।’’ একই সুর রানাঘাটের ধানতলা বাজারে গোলাপ কিনতে আসা প্রেমিকযুগলেরও। নাম বলতে অনিচ্ছুক সেই যুগল সমস্বরে বললেন, ‘‘ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন ব্যবসায়ীরা।’’
গোলাপ চাষিদের অবশ্য দাবি, ফেব্রুয়ারির শুরুতে গোলাপের ঝাড়ে ছত্রাকের আক্রমণে অনেক ফুল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের দামও চড়া বলে দাবি তাঁদের। নদিয়ার শিমুলতলার গোলাপ চাষি রতন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কিছু দিন আগেও ১০০ গোলাপের দাম ছিল ২৫০টাকা থেকে ৩০০ টাকা। এখন তা বেড়ে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা হয়েছে। লাভের গুড় ফড়েরা খাচ্ছে আমরা কী করব!’’
আবার বাদকুল্লার ফুল ব্যবসায়ী অমর মল্লিকের বক্তব্য, ‘‘চাষিদের থেকে গত বারের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তি দাম দিয়ে গোলাপ কিনতে হচ্ছে। আমরা কী করে কম দামে দেব?’’