Gautam Adani

আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার দর বাড়ল ২৫%! আগাম বকেয়া মেটানোর সিদ্ধান্ত কি মাস্টারস্ট্রোক?

আদানিদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাজারে বকেয়া ৮ হাজার ২৭৩ কোটি ফিরিয়ে দেবে আদানি গোষ্ঠী। এই ঘোষণার এক দিনের মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম বেড়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৩
Share:

সোমবার আদানিদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাজারে বকেয়া থাকা প্রায় ৮ হাজার ২৭৩ কোটি ফিরিয়ে দেবে আদানি গোষ্ঠী। ফাইল চিত্র ।

বাজারের বকেয়া ঋণ আগাম মিটিয়ে দিয়ে তিন সংস্থার কোটি কোটি শেয়ার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সোমবার আদানি গোষ্ঠীর তরফে বিবৃতি জারি করে এই ঘোষণা করা হয়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উন্নতি হল তাদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দরে। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর এক এক করে আদানি গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার শেয়ারে ধস নেমেছে। শোচনীয় অবস্থা হয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েরও। কিন্তু সোমবার বাজারের বকেয়া টাকা মেটানোর কথা ঘোষণার পর দিনই লাভের মুখ দেখল সেই সংস্থা। কিছুটা হলেও বন্ধ হল ‘রক্তক্ষরণ’।

Advertisement

আদানিদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাজারে বকেয়া থাকা প্রায় ৮ হাজার ২৭৩ কোটি ফিরিয়ে দেবে আদানি গোষ্ঠী। আর এই ঘোষণার এক দিনের মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম বেড়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার শেয়ারেও লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে আদানিরা। যদিও বিপর্যয়ের আগে আদানিদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর যা ছিল, এই উন্নতি তার কাছে কিছুই নয়।

২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে নিজেদের সম্পত্তির প্রায় অর্ধেক খুইয়ে ফেলেছে গৌতম আদানির মালিকাধীন আদানি গোষ্ঠী। যার পরিমাণ প্রায় ৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই শেয়ার বাজারের উত্থান আদানিদের ক্ষতির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করবে।

Advertisement

সোমবার আদানি গোষ্ঠীর তরফে ঘোষণা করা হয় তাদের মালিকাধীন, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জ়োন লিমিটেডের ১৬ কোটি ৮২ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১২ শতাংশ), আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ৩ শতাংশ) এবং আদানি ট্রান্সমিশন লিমিটেডের ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭০ হাজার শেয়ার (মোট শেয়ারের ১.৪ শতাংশ) বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। যথা সময়ে সেই শেয়ারগুলি বাজারে আনতে অঙ্গীকারবদ্ধ তারা।

কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ে ২০ হাজার কোটি টাকার এফপিও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। তা হলে হঠাৎ করে কেন নতুন করে বাজারে শেয়ার ছাড়ছে আদানিরা? উঠেছিল সে প্রশ্নও।

শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিজেদের অর্থনৈতিক ভাবে সবল দেখাতেই এই সিদ্ধান্ত। অতীতে এই শেয়ারগুলির পরিবর্তে বাজার থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। সেই ঋণ পরিশোধের সময় ছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই আগাম সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। ফেরত পেয়েছে বন্ধক থাকা শেয়ারগুলি। সেই শেয়ারগুলিই বাজারে আনতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের অভিযোগের পর আদানিদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। সংস্থা ক্ষতির মুখে পড়ার পর আদানিরা আর্থিক ভাবে স্থিতিশীল কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। কিন্তু সময়ের আগে বকেয়া মিটিয়ে বন্ধক শেয়ারগুলির মালিকানা ফেরত পেয়ে নিজেদের আর্থিক ভাবে সবল বলে দেখাতে চাইছে আদানিরা।

আগাম বকেয়া টাকা মেটানোর আদানিদের এই সিদ্ধান্ত যে আখেরে তাদের ক্ষতির পরিমাণ একটু হলেও কমিয়েছে, তা মঙ্গলবারের শেয়ারের দরে স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement