মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
সাংসদ পদ খারিজ হওয়া সত্ত্বেও সরকারি উৎসবে প্রধান অতিথি হিসাবে মহুয়া মৈত্র কী হিসাবে আমন্ত্রিত হলেন, সেই প্রশ্নে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। প্রধান অতিথির তালিকায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নম সুলতানা মীরের আগে তাঁর নাম কেন, সেই প্রশ্নও উঠছে।
বুধবার থেকে কালীগঞ্জের পলাশিতে নদিয়া জেলা সৃষ্টিশ্রী মেলা শুরু হয়েছে। আয়োজক জেলা প্রশাসন। সন্ধ্যায় মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং জৈবপ্রযুক্তি মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। মঞ্চে জেলা সভাধিপতি এবং কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, স্থানীয় বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন।
সংসদে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিতর্কে সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর মহুয়া এখন আর কোনও সাংবিধানিক পদে নেই। তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক সভানেত্রীর পদে রয়েছেন। সেই পদাধিকার বলে তিনি সরকারি মঞ্চে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করতে পারেন কি না, বিরোধীরা সেই প্রশ্ন তুলছেন।
এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি জেলার আর এক সাংসদ, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তাঁর দাবি, "তৃণমূল সরকারের সংস্কৃতিই এমন। মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। তার পরেও তিনি সরকারি মেলায় আসল অলঙ্কৃত করছেন।” অনুষ্ঠানে ডাক পাননি কালীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের অজয় সরকারও। তাঁর প্রশ্ন, “এটা দলের মেলা নয়, সরকারি মেলা, সেখানে আমরা কেন আমন্ত্রণ পাব না?” সিপিএমের দেবাশিস আচার্যের আক্ষেপ, “সরকারি কর্মসূচিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিদের ঠাঁই হয় না, অথচ জনপ্রতিনিধি না হয়েও দলের নেতানেত্রীরা সরকারি মঞ্চে আলো করে বসে থাকেন!”
একাধিক বার চেষ্টা করেও মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তারও উত্তর মেলেনি। তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নম সুলতানা মীর বলেন, “আমরা সাংসদ পদ খারিজের বিষয়টিকে মান্যতা দিচ্ছি না। তা ছাড়া, মহুয়া মৈত্র এক জন সমাজসেবী হিসাবে উপস্থিত থাকতেই পারেন।” প্রধান অতিথিও হতে পারেন? তারান্নুম বলেন, “ওটা হয়তো ভুল করে হয়েছে। তবে মেলার আয়োজক তো জেলা প্রশাসন, আমরা নিমন্ত্রিত ছিলাম মাত্র।”
এই সব প্রশ্ন ওঠা প্রসঙ্গে নদিয়া জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ শুধু বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”