প্রতীকী ছবি।
প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার নার্সিংহোম ভাঙচুর এবং বিক্ষোভ-অবরোধের পৃথক দু’টি ঘটনা ঘটে কৃষ্ণনগর ও বগুলায়।
কৃষ্ণনগরের ঘটনায় মৃত প্রসূতির নাম রীতা দাস।(২০)। বাড়ি কৃষ্ণগঞ্জের জয়ঘাটা এলাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে কৃষ্ণনগরের বউবাজার এলাকার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। আর বগুলার ঘটনায় মৃত প্রসূতির নাম লিপিকা বিশ্বাস(২৬)। তাঁর বাড়ি হাঁসখালির বেনালী গ্রামে। বুধবার তাঁকে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ চিকিৎসক অমরেশ মণ্ডল রীতাদেবীর সিজার করেন। রীতা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরিবারের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার সময় রীতা একেবারে সুস্থ ছিলেন। তাঁর বাবা আনন্দ দাসের অভিযোগ, “আমাদের কাছে নার্সিংহোম অনেককিছু গোপন করেছে। রাতে দু’টো নাগাদ আমাদের জানানো হয় যে, রীতার অবস্থা ভাল নয়। তার আগে নার্সিংহোমের কর্মীরা আমাদের কাছে বার-বার টাকা চাইছিলেন।”
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেও কোনও ভাবে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসক রীতাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। ওই নার্সিংহোমের আইসিইউ না থাকায় কাছেই অন্য একটি বড় নার্সিংহোমে তাঁকে রেফার করা হয়। ভোর রাতে সেই নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
এর পরই বউবাজারের নার্সিংহোমে এসে বিক্ষোভ দেখান মৃত প্রসূতির পরিবারের লোকজন। সেখানে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এই ঘটনায় অবশ্য কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।
বউবাজারের নার্সিংহোমের ম্যানেজার পপি ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের তরফে গাফিলতি ছিল না। রোগীর পরিবার তাঁর শারীরিক সমস্যার কথা আমাদের কাছে গোপন করেছিল।”
চিকিৎসক অমরেশ মণ্ডল বলেন, “রোগী খারাপ অবস্থায় এসেছিলেন। আমরা যদি দ্রুত সিজার না করতাম তা হলে মা-বাচ্চা দু’জনেই মারা যেত। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন প্রসূতি।”
এ দিন বগুলাতেও এক প্রসূতির মৃত্যুর পর প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। বিক্ষুব্ধ পরিজনেরা হাসপাতালের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ দিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।
পরিবারের অভিযোগ, রোগীকে অজ্ঞান করার একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুরু হয় খিঁচুনি। তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যা্ওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার বীরেন মজুমদারের কথায়, “চিকিৎসার গাফিলতি হয়নি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে স্পষ্ট হবে।”