জেএনএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন গাফিলতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে আগেই কল্যাণীর কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করেছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন বা এনএমসি।শো-কজের জবাবও দিয়েছিল জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সেই জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি এনএমসি। পরিণামে কলেজ কতৃপক্ষকে ‘শাস্তি’ হিসাবে ১২ লক্ষ টাকা জরিমানা করল এনএমসি কর্তৃপক্ষ। যদিও এনএমসি-র যদিও এই ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ। উল্টে, কর্তৃপক্ষের তরফে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, জরিমানার টাকা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
নদিয়ার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলার একটা বড় অংশের মানুষ জেএনএম হাসপাতালের উপর নির্ভর করেন। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী, সম্প্রতি এনএমসি নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেয়, কলেজের অধ্যক্ষ ওই পদের যোগ্য নন। নোটিসে দাবি করা হয়েছিল, কলেজের মাত্র পাঁচ জন ব্যক্তি ‘বায়োমেট্রিক’ হাজিরা দিয়ে থাকেন। বাকিরা কেন বায়োমেট্রিক হাজিরা দেন না এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে কী পদক্ষেপ করেছেন তাও জানতে চেয়েছিল এনএমসি কর্তৃপক্ষ।ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে সাইটোপ্যাথোলজি, হেমাটোলজি ও সি/এস ‘ব্যাকটেরিয়া কালচার অ্যান্ড সেনসিটিভিটি’ পরীক্ষা কম হয়ে থাকে। এমনকি মৃতদেহের ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে বলে জানায় এনএমসি। সেই সঙ্গে ‘অপারেটিভ ক্লিনিকাল আউটলোড’ সামগ্রিক ভাবে অপর্যাপ্ত বলেও মন্তব্য করে এনএমসি। পর্যাপ্ত নয় এফএপি বা পড়ুয়াদের ‘ফ্যামেলি অ্যাডপটেশন প্রোগ্রাম’ও।
এনএমসি-র নির্দিষ্ট পোর্টালে হাসপাতালের পরিষেবা সংক্রান্ত নানা তথ্য আপলোড করতে হয় কর্তৃপক্ষকে। সেই সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে এনএমসি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে থাকে। কল্যাণীর এই মেডিক্যাল কলেজের নানা গাফিলতি ও অব্যবস্থা সামনে আসায় কর্তৃপক্ষকে শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়। তার উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়াতেই এই জরিমানা বলে কলেজের অধ্যাপক ও চিকিৎসকদের একাশের দাবি।
তবে জরিমানার করার পর কলেজের শিক্ষকদের একটা অংশ গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এঁদেরই একজন বলেন, “আমাদের কলেজে বিভিন্ন বিভাগে অন্তত ন’জন শিক্ষক আছেন যাঁরা এনএমসি-র নির্দেশিকা অনুযায়ী অধ্যক্ষ পদের জন্য যোগ্য। কিন্তু তারপরেও কেন নির্দিশিকা অনুযায়ী যোগ্য নন এমন একজনকে অধ্যক্ষ পদে বসিয়ে ১২ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়া হবে। এই টাকা তো সাধারণ মানুষের করের টাকা।” জেএনএম হাসপাতালের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “এমনটা অনেক কলেজের ক্ষেত্রেই হয়েছে। শুধু আমাদের কলেজই নয়। আরও একাধিক কলেজকে জরিমানা করা হয়েছে। বিষয়টি সরকার দেখছে।”