প্রতীকী ছবি
ভিন্ রাজ্যে নিজেদের কাজ ছেড়ে প্রাণের দায়ে ঘরে ফিরেছেন তাঁরা। সেই ফেরার পথের বৃত্তান্ত অধিকাংশের ক্ষেত্রেই বেদনাদায়ক। ফিরেই যেতে হয়েছে নিভৃতবাসে। কিন্তু সবসময়ে যে চিন্তা পরিযায়ী শ্রমিকদের মানসিক ভাবে ধ্বস্ত করেছে তা হল, ভবিষ্যতে পেট চালাবেন কী করে। জেলা প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, এঁদের মাল্টিপারপাস জবকার্ডের ব্যবস্থা করে ইতিমধ্যে একশো দিনের কাজ দেওয়া শুরু হয়েছে।
নদিয়ার জেলাশাসক বিভু গোয়েল শনিবার টেলিফোনে বলেন, ‘‘ফিরে আসা শ্রমিকদের কাজ দিতে আমাদের নানা রকম পরিকল্পা রয়েছে। মাল্টিপারপাস জবকার্ড দেওয়া শুরু হয়েছে ব্লকে ব্লকে। নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। একশো দিনের কাজ তাঁরা পাবেন। ইতিমধ্যে করিমপুর -২ ব্লকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর অনেকে একশো দিনের কাজ করতে শুরুও করেছেন।’’
এ ব্যাপারে করিমপুর -২ ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ কুমারের মন্তব্য, ‘‘এই ব্লকে প্রায় চার থেকে সাড়ে চার হাজার শ্রমিক ফিরেছিলেন। প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কোয়রান্টিন থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। এঁদের ৬০ শতাংশের জবকার্ড ছিল। বাকিদের কার্ড আমরা ইতিমধ্যে করে দিয়েছি। তাঁরা অধিকাংশ একশো দিনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।’’ বিভু গোয়েল এ দিন আরও জানান, যে সব মানুষ ভিন রাজ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন তাঁরা যাতে এখানেও ওই সেক্টরে কাজ পান তার জন্য হোটেল মালিকদের সঙ্গে সরকার কথা বলছে। যাঁরা যে ক্ষেত্রে কাজ করতেন তাঁদের সেখানে কাজ দিতে পারা যায় কিনা সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
কেরলে দীর্ঘদিন আটকে ছিলেন মকবুল মালিতা। ধুবুলিয়া চিবিপোতায় একটি স্কুলে নিভৃতাবাসে আছেন তিনি। ফোনে জানান, ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে আর যাবেন না। নিজের এলাকায় চাষবাস করে সংসার চালাবেন। মহারাষ্ট্র থেকে এসেছেন তেহট্টের জয়ন্ত দেবনাথ সৌমিত্র সাহা ও উত্তম সাহা। তাঁরাও বলেন, আপাতত ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। উত্তম সাহা বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। আপাতত ১০০ দিনের কাজ করেই সংসার চালাব।’’
তবে বেশিরভাগ শ্রমিকদের দাবি, এখনও তাঁদের জবকার্ড নেই। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে তাঁরা কাজে যোগ দিয়ে অর্থ উপার্জন করবেন? এ বিষয়ে তেহট্ট ১ বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠক বলেন, "আপাতত ব্লক অফিসের বিভিন্ন টিম তৈরি করা হয়েছে যারা পরিযায়ী শ্রমিকদের পরামর্শ দেবেন এবং ফর্ম পূরণ করে জবকার্ড প্রদান করবেন।’’