Corona Testing

বদল কিটে, ছোঁয়া যাবে লক্ষ্যমাত্রা?

কিন্তু দু’এক দিন ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি নদিয়া। সে ক্ষেত্রে গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখা যাবে কী ভাবে? 

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনার গতিরোধের জন্য ব্যাপক সংখ্যায় নমুনা পরীক্ষা এবং উপসর্গহীন ভাইরাস বাহকদের চিহ্নিত করাই যে অন্যতম উপায় সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কোনও সংশয় নেই। বিশেষ করে ‘কমিউনিটি টেস্ট’ বা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে নির্বিচারে লালারস পরীক্ষা বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

একই পরামর্শ দিচ্ছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-ও। সেই মত রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন থেকে জেলায় নির্দেশ আসছে। বিশেষ করে যে সব এলাকায় এখনও পর্যন্ত সে ভাবে করোনার প্রাদুর্ভাব নেই সেই সব এলাকাতেই বেশি করে নির্বিচারে পরীক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তা কি প্রয়োজন মতো হচ্ছে? রাজ্য থেকে যে দৈনিক লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছেস, তা কিন্তু এখনও পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি নদিয়া জেলা। নদিয়া থেকে কল্যাণী জেএনএম ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। দুই মিলিয়ে জেলা থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৮০০ নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেএনএমে ৬০০ আর মুর্শিদাবাদে ২০০। জেলার উত্তরে মুর্শিদাবাদ ঘেঁষা তেহট্ট মহকুমার চারটি ব্লক এবং সদর মহকুমার নাকাশিপাড়া, কালীগঞ্জ ও চাপড়া ব্লকের নমুনা পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদে। বাকি নমুনা যায় জেএনএমে। কিন্তু দু’এক দিন ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি নদিয়া। সে ক্ষেত্রে গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখা যাবে কী ভাবে?

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ মোতাবেক যে সব এলাকায় ০ থেকে ২ শতাংশ আক্রান্তের সন্ধান মিলে, সেখানে নির্বিচারে পরীক্ষা করতে হবে। নদিয়ার ১৮টি ব্লক ও ১১টি পুরসভা এলাকা থেকে উপসর্গযুক্ত ও আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা লোকজন বা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাইরে পুলিশ কর্মী, সিভিক ভল্যান্টিয়ার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বাদ রেখে উপসর্গহীন ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে রোজ গড়ে ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। দিন দশেক আগে থেকে সেই কর্মসূচি প্রাথমিক ভাবে শুরুও হয়ে গিয়েছে বলে জেলার কর্তাদের দাবি।

Advertisement

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না কেন? সেই নমুনা পরীক্ষা ১০ থেকে ১৫-র মধ্যে আটকে থাকছে কেন? জেলার কর্তাদের দাবি, এর অন্যতম কারণ দিন কয়েক আগে কিট নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়া। তার আগে গতি বাড়ানো হয়েছিল। এমনকি এক দিনে সাড়ে আটশোর মত নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য থেকে নতুন ধরনের কিট আসায় সেই প্রক্রিয়া অনেকটাই থমকে যায়। কারণ ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্টদের নতুন কিট ঠিক মত ব্যবহার করার জন্য সময় লাগছে। তবে এখন আবার নতুন করে গতি আস,ছে বলে তাঁরা দাবি করছেন। কেননা এই কিটে আরও তাড়াতাড়ি রিপোর্ট আসছে। তাই লক্ষ্যমাত্রাও বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ বার থেকে দিনে ৯০০ করে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে যাবে ৩০০, জেএনএমে ৬০০।

সোমবার এ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বৈঠকও করেছেন। জেলা কর্তাদের দাবি, নদিয়ায় এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়নি। কারণ এখনও পর্যন্ত মাত্র তিন-চার জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যাঁদের কমিউনিটি টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা গিয়েছে। এখন জেলায় ২২টি স্থায়ী নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র ও একটি গাড়িতে ভ্রাম্যমাণ নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র আছে। এ বার গ্রাম ও মহল্লায় অস্থায়ী শিবির করা হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দৈনিক হিসাবে নমুনা পরীক্ষা ও আক্রান্তের সংখ্যা সমানুপাতিক হারে না-ও বাড়তে পারে। কিন্তু পরীক্ষা বেশি করলে আক্রান্ত ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement