মৃতার মা আদালতে হাজির না-হওয়া নিয়ে কোর্টে এক প্রস্ত নাটক হয়ে হল। প্রতীকী ছবি।
নদিয়ায় নাবালিকার ধর্ষণ-খুনের মামলায় মৃতার মায়ের আদালতে হাজির না-হওয়া নিয়ে এক প্রস্ত নাটক হয়ে গেল শনিবার।
এ দিন মৃতার মা তথা এই মামলায় অভিযোগকারীর সাক্ষ্যদানের কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন রানাঘাট আদালতের বিচারক সুতপা সাহা। কিন্তু শুনানির শুরুতেই সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, অভিযোগকারী অসুস্থ, তাই আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেননি। অভিযুক্ত রঞ্জিত মল্লিকের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করেন।
গত ২১ জানুয়ারি এই মামলায় এক নাবালক-সহ নয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছিল। এ দিন ছিল প্রথম সাক্ষীর হাজিরার দিন। দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ শুনানি শুরু হয়। সাক্ষী না আসায় অভিযুক্তদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি সিবিআই আদালতে দাখিল করেনি কেন। এক ধাপ এগিয়ে ওই আইনজীবীদের অন্যতম রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, "অভিযোগকারী নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে এসেছেন। তিনি আদালত চত্বরেই রয়েছেন। অথচ সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।" এজ্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যেরাও বিচারকের উদ্দেশে একই কথা বলেন।
এর পরেই শুনানি থামিয়ে বিচারক আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিককে ডেকে অভিযোগকারী আদালত চত্বরে আছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তাঁকে আদালত চত্বরে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তদের আর এক আইনজীবী অপূর্ব বিশ্বাস বিচারককে বলেন, “এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত দীপ্ত গয়ালির জামিনের জন্য কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে তা উঠেছিল। ওই দিন সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে ডিভিশন বেঞ্চকে জানানো হয়েছিল, ৪ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে অভিযোগকারীর সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই হাই কোর্টের শুনানি ১৫ দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। অথচ এ দিন অভিযোগকারী সাক্ষী দিলেন না। সিবিআই এই মামলার গতি শ্লথ করতে চাইছে।"
সংশোধনাগার থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে ওঠার সময়ে অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সমরেন্দু গয়ালি দাবি করেন, “সিবিআই বিজেপির দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নজরদারিতে তদন্ত করা হোক।" সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে আরও একটি ‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট’ দেওয়া হবে। মামলার পরবর্তী সাক্ষী হাজিরার দিন ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ধার্য হয়েছে।