সত্যজিৎ বিশ্বাস।
কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হল। বুধবার বিধাননগরে ময়ূখ ভবনের বিশেষ আদালতের বিচারক জয়শঙ্কর রায়ের এজলাসে ওই মামলার তদন্তকারী সিআইডি অফিসার কৌশিক বসাকের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
২০১৯ সালে সরস্বতী পুজোর আগের রাতে হাঁসখালির মাজিদপুর দক্ষিণপাড়ার ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার সময় কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় সত্যজিৎকে। হাঁসখালি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি। গঠিত হয় বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’। মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
এ দিন বেলা ১২টায় শুনানির শুরুতেই অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সুবীর দেবনাথ সিআইডি অফিসার কৌশিক বসাককে বলেন, খুনে ব্যবহৃত বন্দুকের ‘ফায়ারিং রেঞ্জ’ (গুলি ছোড়ার দূরত্ব) এবং ‘ফায়ারিং এজ’ (শেষ কবে গুলি ছোড়া হয়েছিল) তিনি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাননি। সাক্ষী তা স্বীকার করেন। আইনজীবী দাবি করেন, নিরপরাধদের ফাঁসাতে পুলিশের কাছে থাকা দুটি বন্দুক থেকে নিজেরা গুলি ছুড়ে ফরেনসিক ল্যাবে সেটি পাঠানো হয়েছিল। সাক্ষী তা অস্বীকার করেন।
আইনজীবী জানান, স্টেট ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ঘটনাস্থল ঘুরে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন। তা হাতে পেয়েও সাক্ষী আদালতে জমা দেননি। তদন্তকারী অফিসার তা মেনে নেন। আইনজীবী জানতে চান, অন্যতম অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডারিুর কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়ার জন্য সাক্ষী আদালতের অনুমতি নিয়েছিলেন কি না এবং যখন তা নেওয়া হয় তখন কোনও ম্যাজিস্ট্রেট ঊপস্থিত ছিলেন কি না। সাক্ষী জানান, দু’টি প্রশ্নের উত্তরই ‘না’।
আইনজীবী জানান, ঘটনার আগে সত্যজিৎ কোথায় এবং কাদের সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন সে বিষয়ে কোনও তদন্ত হয়নি। সাক্ষী তা স্বীকার করে নেন। আইনজীবী বলেন, ঘটনার সময়ে যিনি হাঁসখালি থানার অফিসার ইন-চার্জ ছিলেন এবং যে সব পুলিশকর্মী অনুষ্ঠান চলাকালীন মাঠে কর্তব্যরত ছিলেন তাঁদের কাউকেই সাক্ষী হিসাবে রাখা হয়নি। সাক্ষী তা স্বীকার করেন। আইনজীবী জানান, অভিযুক্তদের আঙুলের ছাপ পরীক্ষার জন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে সিআইডি-র ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যুরোয় পাঠানো হয়েছিল। সাক্ষী তা স্বীকার করতেই আইনজীবী দাবি করেন, পুলিশের উপরমহল এবং রাজনৈতিক নেতাদের কথা মতো রিপোর্ট তৈরি করার জন্যই তিনি এমন করেছেন। সাক্ষী তা অস্বীকার করেন।
বিচারক এ বার অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। আগামী ৮ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।