মেয়ের দেহ আগলে মা। ধুলিয়ানে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ির লাগোয়া আমবাগানে মিলল বছর পনেরোর এক কিশোরীর গলার নলি কাটা দেহ।
সোমবার সকালে, ওই সদ্য কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাকে। আততায়ী তার পরিচয় প্রকাশ হয়ে পড়ার ভয়েই কিশোরীকে খুন করেছে বলে মনে করছে পুলিশ।
ওই কিশোরীর মোবাইলটিও মিলেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, মোবাইলের কললিস্ট দেখেই অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রামেরই পরিচিত কেউ এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলেও তদন্তকারীদের অনুমান। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সম্ভবত, রবিবার রাতে মোবাইলে পরিচিত কারও ফোন পেয়েই মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। তার পরেই তার উপরে অত্যাচার চালিয়ে খুন করা হয়।’’
শমসেরগঞ্জের চাচন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি গ্রাম ইসবপুর ও নতুন জালাদিপুর। মৃতা কিশোরীরা ৪ ভাই, ২ বোন। বছর ১২ আগেই মারা গেছেন বাবা। বছর খানেক আগে ষাটোর্ধ বৃদ্ধা মা ওই কিশোরী ও ছেলেদের নিয়ে চলে আসেন তাদের মামার বাড়ি নতুন জালাদিপুরে। সেখানেই এক কামরার একটি ঘরে মা ও ছোট মেয়ে থাকতেন।
ঘরে জায়গা হত না বলে অন্যদিনের মতো তার ছোট দুই ছেলে এদিনও ছিল পাশের বাড়িতেই ঘুমিয়ে। বড় ছেলে ব্যারাকপুরে রাজমিস্ত্রীর কাজে। আর এক ছেলে বাবার বাড়ি ইসবপুরে।
মা বলেন, ‘‘শরীর চলছিল না। তাই রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ শুয়ে পড়ি। মেয়ে তখনও বিড়ি বাঁধছিল। চোখ লেগে এসেছিল। ভোরে ঘুম ভেঙে দেখি অন্য দিনের মতো মেয়ে পাশে নেই। বাইরে বেরোতেই প্রতিবেশিদের মুখেই জানতে পারি কিছু দূরেই পিলকির বাগানে মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে।’’
পাশের বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা কিশোরীর ছোট ভাই বলছে, ‘‘দিদির কাছে ১০টা টাকা চেয়েছিলাম। দিদি বলেছিল সকালে দেবে। দিদির কাছে আর কিচ্ছু চাইতে পারব না কোনও দিন।’’ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে ছেলেটি।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ধর্ষণ করেই খুন করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না পেলে নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। মোবাইল ফোন মিলেছে। খুব শীঘ্রই খুনিকেও ধরা যাবে বলে মনে হচ্ছে।’’