প্রশান্ত কিশোর।
আসন্ন বিধানসভা ভোটে ‘পিকে-র টিম’ তাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে দাবি করলেন কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সুবিনয় ঘোষ। যদিও কোনও মহল থেকেই এই দাবির সপক্ষে কোনও প্রামাণ্য নথি মেলেনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে নদিয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের চেয়ে প্রায় ৫৪ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তার উপরে আছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ফলে মূলত পুর এলাকা নিয়ে গঠিত কৃষ্ণনগর উত্তর (পূর্বতন কৃষ্ণনগর পূর্ব) কেন্দ্রটি ধরে রাখাই তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কেন্দ্রের বিধায়ক অবনীমোহন জোয়ারদার কিছু দিন আগে প্রয়াত হয়েছেন। ফলে নতুন মুখের খোঁজে রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের টিম।
কৃষ্ণনগর পুরসভার এক সময়ের কাউন্সিলর সুবিনয় ঘোষ ২০০৬ সালে তৎকালীন কৃষ্ণনগর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থীকে পরাজিত করেই বিধায়ক হয়েছিলেন। তাঁর দাবি, “পিকে-র টিম বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে বলা হয়, বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণনগরে যাঁরা তৃণমূলের প্রার্থিপদের দাবিদার, তাঁদের ভাবমূর্তি খুব খারাপ। আমি রাজি থাকলে আমাকেই তারা মনোনয়ন দিতে চায়। আমি সটান ‘না’ বলে দিয়েছি।”
কৃষ্ণনগর আদালতের পরিচিত আইনজীবী, সিপিএমের সারা ভারত আইনজীবী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তথা রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি সুবিনয়বাবুর দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছিল। তাঁর কথায়, “আমি দেখা করতে রাজি হইনি। কিন্তু সোমবার বেলা ১টা নাগাদ এজলাস থেকে বেরিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনে এসে দেখি, চার জন অচেনা লোক দাঁড়িয়ে। সঙ্গে এক পরিচিত তৃণমূল নেতা। ভদ্রতার খাতিরে বসতে বলতেই হল।”
সুবিনয়বাবু জানান, ওই চার জন নিজেদের পিকের টিমের লোক বলে পরিচয় দেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের নাম ‘রেড্ডি’, তিনি নদিয়া জেলার দায়িত্বে আছেন বলে জানান। প্রাক্তন বিধায়কের দাবি, “আমাকে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন ওঁরা। সেই সঙ্গেই জানতে চান, আমি তৃণমূলে কী ধরনের পদ চাই এবং আমার আর কোনও দাবি আছে কি না। আমি বলেছি, আদর্শ বিক্রি করতে পারব না। আমি টাকার জন্য রাজনীতি করি না।”
তৃণমূলের নেতারা অবশ্য এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহা এবং দলের মধ্যে তাঁর প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত, প্রয়াত অবনীমোহনের ছেলে অমিতাভ জোয়ারদার দু’জনেই দাবি করেন, বিষয়টি তঁদের অজানা। দলের নদিয়া জেলার মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ও বলেন, “এমন কিছু ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বলবেন।”