তাপস সাহা। ফাইল চিত্র।
খাঁটি টক দই, ঠান্ডা জল আর পাকা বেল। সব দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘোল। যাঁরাই বিধায়কের কার্যালয়ে আসছেন, তাঁদের প্রত্যেকের হাতে ঘোলের গ্লাস তুলে দেওয়া হচ্ছে! নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর এ ভাবেই নদিয়ার বেতাইয়ে কর্মী-সমর্থকদের ঘোল খাওয়াতে দেখা গেল তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে।
সিবিআই তদন্তের নির্দেশে তাপস অবশ্য নির্লিপ্তই। তিনি আগেই জানিয়েছেন, তদন্তে সিবিআইকে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন। বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের দইয়ের ঘোল খাওয়াতে খাওয়াতে তাপস বলেন, ‘‘এক দিকে বিজেপির রাজনৈতিক যড়যন্ত্র, অন্য দিকে দলের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র। তার মধ্যে এই তাপপ্রবাহ। একটাই ওষুধ— ঠান্ডা ঘোল। আর ঘোল খাওয়াতে তো ভালই লাগে।’’ এ নিয়ে শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘উনি নিজের দলকে যে ভাবে ঘোল খাওয়াচ্ছেন, আগে তাঁর কী হয়, সেটা দেখুন। তবে ঘোল খাওয়া ভাল। মাথা ঠান্ডা থাকে।’’
ঘোল বানাচ্ছেন তাপস সাহা। নিজস্ব ছবি।
উচ্চ আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই দলের একাংশকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন তাপস। কখনও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগ তুলে তুলে সরব হয়েছেন, কখনও আবার দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে দাবি করেছেন। নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্যা টিনা সাহার বিরুদ্ধেও অভিষেকের নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছেন তাপস। বলেছেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যমাক স্ট্রিটের অফিসের একাধিক স্টাফ টিনার থেকে পয়সা খেয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যেটা অভিষেকও জানেন না। অভিষেক বুঝতেও পারছেন না, তাঁর নাম করে নদিয়া থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছে টিনা। বিধায়ক হিসেবে আমার খারাপ লাগছে, যে দিন এই সত্য প্রকাশ্যে আসবে, সে দিন আর দলের কিছু করার থাকবে না।’’
যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিনা। তিনি বলেন, ‘‘কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তার দায় দল নেবে না। তদন্তের ভয়ে উনি এখন পাগলের প্রলাপ বকছেন।’’