শুভেন্দু অধিকারী।
একে সামনে পুরভোট। তার উপরে দলের মধ্যে নেতাদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক এবং শমশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলামের মধ্যে গোলমালে রীতিমতো অস্বস্তিতে প়ড়েছে শাসকদল। এই অবস্থায় জেলা তৃমমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী সোমবার কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের সব পুরপ্রধান ও শহর কমিটির সভাপতিদের। সেখানে তিনি সব দ্বন্দ্ব ভুলে পুরভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, শুভেন্দুবাবু নেতাদের বলেছেন, যেখানে যা গোলমাল রয়েছে, তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুত মিটিয়ে নিতেই হবে।
সন্ধ্যায় কলকাতায় একটি সভাগৃহে সেই বৈঠক হয়েছে। সেখানে এখন থেকে দলের নেতাকর্মীদের ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকেই দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি ছোট ছোট বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মাইক বাজিয়ে সভা যেন না হয় তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ড ভিত্তিক একাধিক প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি কোন্দল মিটিয়ে সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।
এ দিনের ওই বৈঠকে ডোমকল বাদে জেলার সব পুরসভার চেয়ারম্যান ও শহর সভাপতিরা ডাক পেয়েছিলেন। তবে বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্যর অবশ্য ডাক ছিল না। ছিলেন জেলা সভাপতি আবু তাহের খান ও দলের চেয়ারম্যান সুব্রত সাহা। নীলরতন আঢ্যর অনুপস্থিতির বিষয়ে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘এদিন চেয়ারম্যানদের বৈঠক ছিল। তিনি তো এখন চেয়ারম্যান পদে নেই। তাই ডাক পাননি।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, ‘‘এখন থেকে প্রার্থী ঠিক করতে বলা হয়েছে। ওয়ার্ড ভিত্তিক একাধিক প্রার্থীর তালিকা ঠিক করতে হবে। প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ তুলে আনতে হবে। প্রচারের জন্য দেওয়াল লিখন শুরু সহ একাধিক নির্দেশও দিয়েছেন।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘পুর নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পর্যবেক্ষক। সকলকে সঙ্গে নিয়ে ভোট করা হবে।’’
মুর্শিদাবাদের সব পুরসভা এখন তৃণমূলের দখলে। তবে গত লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী ধুলিয়ান, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, কান্দি ও বহরমপুর পুরসভায় শাসকদল পিছিয়ে রয়েছে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ পুরসভায় বিজেপি, ধুলিয়ান, বহরমপুর ও কান্দিতে কংগ্রেস এগিয়েছিল। জঙ্গিপুর, বেলডাঙা ও ডোমকল পুরসভায় এগিয়ে রয়েছে শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গিপুর, বহরমপুরসহ জেলার কয়েকটি পুরসভাতে দলের আকচাআকচি রয়েছে। ফলে পুরবোর্ডগুলি দখল করা শাসকদলের কাছে চ্যালেঞ্জের। সূত্রের খবর, যে সব পুরসভা এলাকায় দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে সেগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরভোট পরিচালনার জন্য যে কমিটি গড়ার নির্দেশ ছিল, তা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা থাকলে তা বসে মিটিয়ে ভোটের ময়দানে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’