পড়ুয়াদের আগ্রহ তো ছিলই। ছেলেমেয়েদের পিছু পিছু এসেছিলেন মায়েরাও। টেলিস্কোপে চোখ রেখে তাঁরা একে একে চিনলেন কালপুরুষ, সপ্তর্ষিমণ্ডল, ধ্রুবতারা, সিংহ রাশি, মিথুন রাশি, স্বাতী নক্ষত্র।
রাতের আকাশ চেনাতে উদ্যোগী হয়েছিল বহরমপুর ব্লকের হিকমপুর হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতে হাতিনগরের হিকমপুরে হাজির হন কলকাতার ‘সেন্টার ফর অবর্জাভেশন্যাল অ্যাস্ট্রোনমি’ সংগঠনের দু’জন সদস্য বিশ্বজিৎ দাস ও বিশ্বরূপ রায়। টেলিস্কোপ বসানো হয় স্কুল চত্বরে। পড়ুয়াদের মধ্যে তা নিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়। পাশের হাতিনগর গার্লস ও বয়েজ স্কুলের পড়ুয়ারাও হাজির হন। ভিড় জমান অভিভাবকেরাও। সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হয় তার দেখার পালা। শেষ হয় প্রায় রাত বারোটায়।
প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানান, আর্থিক কারণে পড়ুয়াদের অনেকের পক্ষে কলকাতায় গিয়ে তারামণ্ডলে রাতের আকাশ দেখার সুযোগ হয় না। ক্লাসে সৌরজগৎ নিয়ে পড়ানোর সময়ে পড়ুয়াদের আগ্রহ দেখে কলকাতার ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা তাতে রাজি হন। বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘পড়ুয়াদের আগ্রহ তো ছিলই। কিন্তু মায়েরাও যে আগ্রহ নিয়ে রাতের আকাশ দেখার জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন, তা দেখে আমরাও অবাক হয়েছি। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা।’’
তারা চিনে দেখে উচ্ছ্বসিত অষ্টম শ্রেণির মাসুদা মুসলিমা, দশম শ্রেণির হাসিনা খাতুন। তাদের কথায়, ‘‘ভূগোল বইয়ে দেখা গ্রহ-নক্ষত্র যে এ ভাবে চোখের সামনে ধরা পড়বে, তা কখনও ভাবিনি।’’ গ্রামের বুলু বিবি এসেছেন বৌমা নাসিমা বিবিকে সঙ্গে নিয়ে রাতের আকাশ চিনতে। পেয়ারা বিবি বলছেন, ‘‘ছেলের কাছে শুনে আমিও চলে এসেছি দেখতে।’’ তারা দেখেই তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন।