মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি
‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে তাঁকে শুনতে হয়েছিল, ‘ধৈর্য ধরুন।’’তার পরেও মাস খানেক কেটে গিয়েছে। কোনও সুরাহা হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। এর মধ্যে জানতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে আসছেন। ফের ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে তিনি বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে কোনও পদক্ষেপ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসছেন। আমি পুলিশের কর্ডন ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়ে দিদিকে জানাব।’’
এর পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বুধবার সাগরদিঘির ধুমারপাহাড়ে প্রশাসনিক সভার মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানাবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে একটি খোলা চিঠি লিখে খামে ভরে এ দিন সকালে তিনি বহরমপুর থেকে মোটরবাইকে পৌঁছে যান সভামঞ্চের মাঠে।
সেখানে জানতে পারেন বাহালনগরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। মোটরবাইকে তিনি পৌঁছে যান সেই গ্রামে। কিন্তু সেখানেও ভিড়ের চাপে গ্রামে নিহত কামারুদ্দিন শেখের বাড়িতে অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য সাধারণ মানুষের ভিড় ও পুলিশের ভিড় ঠেলে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছাকাছি যেতে পারেননি। এর পরে গাড়ি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাহালনগর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে হাতে খাম নিয়ে গাড়ির পিছনে ছুটতে থাকেন। তাঁকে দেখে মু্খ্যমন্ত্রী ইশারা করে নিরাপত্তারক্ষীর হাতে দিতে বলেন। যেমন বলা, তেমনি কাজ। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকা নিরাপত্তারক্ষীর হাতে খাম ধরিয়ে দিয়ে তিনি স্বস্তি ফেলেন।
দিনভর দৌড়ঝাঁপ শেষে নবগ্রাম সিঙ্গার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মণ্ডল বলছেন, ‘‘নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য বিয়ে ভেস্তে দিয়ে আত্মীয়-পরিজন ছেড়ে শিলায়ন হোমে থেকে বহরমপুর গার্লস কলেজে দর্শন নিয়ে পড়ছে জুলেখা খাতুন। প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই মেয়েটা নার্সিংয়ে পড়ার সুযোগ পেল না। ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে কিছু হয়নি। এ বার দিদিকে চিঠি লিখে সব জানালাম। এখন দেখা যাক, কী হয়!’’