Krishnanagar Incident

প্রাণ যাওয়ার পরেই গলিতে জ্বলল আলো

আক্ষরিক অর্থে কৃষ্ণনগর শহরের জনবসতিপূর্ণ প্রাণকেন্দ্রে হলেও একেবারেই যেখানে পুজোমণ্ডপের সামনে দেহটি মিলেছিল তা একেবারেই গলিপথ।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৫
Share:

স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহ পাওয়ার ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এ ডি জি সি আই ডি সোমা দাস, এ ডি জি সাউথ বেঙ্গল সুপ্রতিম সরকার সহ পুলিশ আধিকারিক রা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।

আর জি করে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের পরে চত্বরের নানা জায়গায় আলো লাগাতে দেখা গিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। কার্যত তারই পুনরাবৃত্তি হল কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামের পিছনে রামকৃষ্ণ মিশন পাড়ায়। তবে সেটুকু পাওয়ার জন্য এক তরুণীর আধপোড়া মৃতদেহ মিলতে হল!

Advertisement

আক্ষরিক অর্থে কৃষ্ণনগর শহরের জনবসতিপূর্ণ প্রাণকেন্দ্রে হলেও একেবারেই যেখানে পুজোমণ্ডপের সামনে দেহটি মিলেছিল তা একেবারেই গলিপথ। কাছেই পুলিশ সুপারের অফিস। রয়েছে সরকারি আধিকারিকদের আবাসন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিসি ক্যামেরা তো দূরস্থান, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই। বেশির ভাগ বাতিস্তম্ভে আলো খারাপ হয়ে ছিল এত দিন। গলিটা অন্ধকারেই ঢেকে থাকত। ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সেগুলি তড়িঘড়ি বদলানোর বা সারানোর ব্যবস্থা করা হয়।

বুধবার সকালে যেখানে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর দেহ মেলে, সেখান থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব মেরে-কেটে ২০০ থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে। গলির এক পাশে জেলা স্টেডিয়ামের পাঁচিল, আর এক পাশে বাড়িঘর। সেখানেই গলির এক পাশে এক চিলতে জায়গায় দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। তার পিছনে স্থায়ী মঞ্চ। সেই মণ্ডপেই পাওয়া গিয়েছিল আধপোড়া দেহ।

Advertisement

এই গলির কোনও প্রান্তেই সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। ফলে নজরদারিও হয় না। গলির মধ্যে কিছু আলো জ্বলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, গলি অন্ধকার থাকায় সন্ধ্যা হতেই ছেলেমেয়েদের জোড়ায়-জোড়ায় এখানে ঢুকতে দেখা যায়। ওই ছাত্রী এবং তাঁকে খুনের অভিযোগে ধৃত যুবককেও এখানে অনেক বার আসতে দেখা গিয়েছে। যুবকটি অবশ্য গত চার মাস বেঙ্গালুরুতে থাকছিলেন। তার আগে যদি তাঁরা গলিতে এসেও থাকেন, তা কত জনের মনে থাকা সম্ভব তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।

কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, এ রকম একটি গলিতে আলোর ব্যবস্থা থাকবে না কেন? আলো বা নজর ক্যামেরা না থাকায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখন যদি রাতারাতি খারাপ আলো সারানো যায়, তা আগে করা গেল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। অবিলম্বে সিসি ক্যামেরা বসানোর

দাবিও উঠেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদির মতে, “এখন ওখানে আলো সারাতে হচ্ছে। এগুলো তো আগে করা উচিত ছিল। নিরাপত্তার অভাব তো সর্বত্র। প্রশাসন এবং সরকার অপরাধীদের আড়াল করতে ব্যস্ত। ওখানে নজরদার ক্যামেরা বসানোও প্রয়োজন।” বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের দাবি, “নিরাপত্তার অভাব দূর করার নূন্যতম ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ এই প্রশাসন, এই সরকার। এই রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একটি গলি কেন অন্ধকারে থাকবে? কেন সেই জায়গা নজরদার ক্যামেরার আওতার বাইরে থাকবে? তার জবাব স্থানীয় প্রশাসনকে দিতে হবে।"

কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান রীতা দাস অবশ্য দাবি করছেন, “ওখানে পর্যাপ্ত আলো ছিল। এ দিন আমরা আলোর সংখ্যা আরও বাড়িয়েছি। শহরের সব জায়গাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তার জন্য কাজ চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement