প্রতীকী ছবি
রাজ্য জুড়ে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করল স্বাস্থ্য ভবন। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারে স্থায়ীপদে এই নিয়োগ করা হল বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যা স্বাধীনতার পরে এই প্রথম হল বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
পাশাপাশি, বিশেষ ভাবে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য দু’মাসের জন্য ভলান্টিয়ার ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানের অভাব ছিলই। করোনা পরিস্থিতিতে সেই অভাব ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। যা সামাল দিতে কার্যত হিমসিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। অন্য জেলার মতো টেকশিয়ানের অভাবে বিপাকে নদিয়ার হাসপাতালগুলিও। এই পরিস্থিতিতে কল্যাণীর জে এন এম হাসপাতালে একজন ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের পাশাপাশি জেলায় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে একজন মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান নিয়োগ হওয়ায় সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে মনে করছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা।
নদিয়া জেলার অন্য হাসপাতালের পাশাপাশি জেলা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্ক, ল্যাবরেটরি, থ্যালাসেমিয়া ইউনিটে মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় এমনিতেই কম ছিল। তার উপর করোনা পরিস্থিতিতে আলাদা করে কোভিড হাসপাতাল তৈরি হওয়ায় সেখানেও মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানের প্রয়োজন পড়ে। পাশাপাশি কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে শুরু করে আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে লালারস সংগ্রহ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে একাধিক মেডিক্যাল টোকনিশিয়ানের। এর পাশাপাশি শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও কল্যাণীর কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালে একজন করে মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান পাঠাতে হয়েছে। ফলে একসঙ্গে এতগুলি জায়গায় এবং এতগুলি ক্ষেত্রে মেডিক্যাল টেকনিশিয়ানের প্রয়োজন হয়ে পড়ায় কার্যত হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্তাদের। এই পরিস্থিতিতে নতুন নিয়োগে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ১৪৯ জনকে স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারের জন্য একই ভাবে স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়েছে ৬৮ জন। এত দিন এই পদে নিয়োগ করা হত না বলে কর্তাদের দাবি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের সদস্য মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “অপারেশন থিয়েটারের জন্য মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান নিয়োগ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এই প্রথম। এত দিন এই পদে কোনও নিয়োগ হত না। এই নিয়োগের ফলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা কিছুটা হলেও সহজ হবে।”
এরই মধ্যে, রবিবার সকাল ৭ টা পর্যন্ত আরও ১৩ জন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়ছে বলে জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে হরিণঘাটা মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় ৪ জন, কল্যাণী মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় ৩ জন, তেহট্ট-১ ব্লকে ২ জন, চাকদহ ব্লকে ৩ জন ও রানাঘাট-২ ব্লকে ১ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত জেলায় ১৮০ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
করোনা পরিস্থিতিতে ১২ জুন পর্যন্ত কর্মীর অভাবে রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ বন্ধ রেখেছিল শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আবার শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ শুরু হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নেহাতই কম বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। রবিবার বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে বাহাদুরপুরের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪০ জন রক্ত দিলেও, পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আরও রক্তদাতার প্রয়োজন বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।