চিৎকার শুনে বিছানা থেকে উঠে এসেছিল আট বছরের ছেলেটি। ঘুম চোখে সে দেখে ধারাল কাটারি দিয়ে তার মাকে এলোপাথাড়ি কোপাচ্ছে যে, সে তারই বাবা।
ছেলেকে গোঙাতে দেখে বাবা এসে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ভোর হতেই প্রতিবেশিদের চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে সে দেখে, বারান্দায় পড়ে রয়েছে মা ফতেমা বিবির (৩২) রক্তাত্ত নিথর দেহ। তার বয়ানের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ গ্রেফতার করে জাহিম শেখ নামের ওই কিশোরের বাবা জামিরুল শেখকে। বেলডাঙা থানার মির্জাপুরের ঘটনা। ঘটনার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে জামিরুল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জামিরুলের বাড়ি পাশের রেজিনগরের ছেতিয়ানি গ্রামে। সে আগে সৌদি আরবে কাজ করতো। সেখান থেকে ফেরার পরে গত দেড় বছর ধরে সে মির্জাপুরে শ্বশুর বাড়িতে থাকতো। জামিরুলের শ্যালক গোলাম মুস্তফা সৌদিতেই থাকেন। তাঁর পাঠানো টাকাতেই সংসার চলে। অভিযোগ, জামিরুল সেই টাকা চুরি করে জুয়ো খেলত। বুধবার রাতে ফতেমার মা বাসিরন বেওয়া বাড়িতে ছিলেন না। রাতে জাহিম টাকা চুরি করার সময় ফতেমা তাকে দেখে ফেলে। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া শুরু হয়। তারা শুয়ে ছিল বাড়ির বারান্দায়। ঘরের মধ্যে শুয়ে ছিল জামিরুল। ধস্তাধস্তিতে ফতেমা অচৈতন্য হয়ে পড়ে। তখনই কাটারি দিয়ে ফতেমাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে জাহিম। আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় জামিরুলের। তাকে ফের ঘরে ঢুকিয়ে ঘুমোতে বলে জাহিম।
বৃহস্পতিবার সকালে থানায় বসে সে পুলিশকে জানায়, ‘‘খুব শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি মায়ের বুকের উপর বসে বাবা কাটারি দিয়ে কোপাচ্ছে। অল্প আলোতে তখন সব বুঝতে পারিনি। ভোরে প্রচুর লোক এল। মা রক্তে পড়েছিল। তখন বুঝতে পারি বাবা মাকে মেরে ফেলেছে।’’