ওএমআর শিট নিয়ে বিতর্ক। প্রতীকী চিত্র।
নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে আবেদন করা একাধিক জনকে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর দেওয়ার অভিযোগ উঠল কৃষ্ণনগর পুরসভার বিরুদ্ধে। আবার মাসখানেক হয়ে গেলেও প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহা পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশের চিঠির উত্তর না দেওয়াতেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
২০১৭ ও ২০১৮ সালে কৃষ্ণনগর পুরসভা বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগের পরীক্ষা নেয়। ২০১৭ সালে ১০১ জন ও ২০১৮ সালে ১০০ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়। হাঁসখালির জয়নারায়ণপুরের বাসিন্দা শান্তনু সরকার ২০১৮ সালের পরীক্ষার্থী। মাস কয়েক আগে তিনি আরটিআই করে ওই পরীক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় জানতে চান। তার উত্তরে পুর কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের কাছে ওই পরীক্ষার উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) নেই। সেগুলি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে পুরপ্রধান রিতা দাস কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন। এরই মধ্যে কৃষ্ণনগরের দুই বাসিন্দা তথা বামপন্থী আইনজীবীও আরটিআই করেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও উত্তর দেয়নি কৃষ্ণনগর পুরসভা।
এরই মধ্যে আরও ন’জন পরীক্ষার্থী ২০১৮ সালের নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে আরটিআই করেছেন। তার উত্তর দিয়েছে পুরসভা। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশ্ন একই হলেও উত্তরের কোনও মিল নেই। বুধবার পুরপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বেশ কয়েক জন পরীক্ষার্থী। তাঁকে আরটিআই-এর বিভিন্ন রকম উত্তর সম্পর্কে জানানো হয়। পুরপ্রধান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি পুরোপুরি অন্ধকারে ছিলাম। কেন এমনটা হল তা প্রধান করণিকের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আরটিআই করে কিছু জানতে গেলে সংশ্লিষ্ট পুরসভার ‘স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার’-এর কাছে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে উত্তর দেন ওই অফিসার। কৃষ্ণনগর পুরসভার ‘স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার’ সুজয় হালদার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, যে দফতরের বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয় চিঠিটা সেই দফতরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ বার সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে যে উত্তর তৈরি করে দেওয়া হয়, আমার কাজ সেটা পাঠিয়ে দেওয়া।” তাঁর ব্যাখ্যা, “এ ক্ষেত্রে আমি প্রধান করণিকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি যা উত্তর দিয়েছেন সেটাই পাঠিয়ে দিয়েছি।” প্রধান করণিক তথা বড়বাবু পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাছে যেটুকু তথ্য আছে তার ভিত্তিতে উত্তর দিতে হচ্ছে। আমার কাছে কোনও ওএমআর শিট আসেনি।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অয়ন শীলের সংস্থাকে আর ২০১৮ সালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতার অন্য একটি সংস্থাকে, যাদের কার্যালয় প্রজ্ঞানন্দ ভবনে। এই দুটি সংস্থাকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহা। পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর চেয়ে অসীমকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, “দায়িত্ব ছেড়ে আসার সময়ে সবটাই বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। আর আমার মা অসুস্থ থাকায় পুলিশের চিঠির উত্তর দিতে পারি নি।”