Santipur TMC

লোকসভায় খারাপ ফল, অভিষেকের ঘোষণায় জল্পনা

বিধানসভার উপনির্বাচনে অবশ্য শান্তিপুর থেকে বড় ব্যবধানে লিড পেয়েছিল শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:২০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত পুরভোটে শান্তিপুরে সাফল্য এসেছিল তৃণমূলের। এবারের লোকসভা ভোটে অবশ্য তারা তা ধরে রাখতে পারেনি। শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র এক তৃতীয়াংশে লিড পেয়েছে তৃণমূল। আর ২১ জুলাই-এর মঞ্চে লোকসভায় কিছু ক্ষেত্রে দলের ব্যর্থতা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাতে অন্যান্য জায়গার সঙ্গে জল্পনা শুরু হয়েছে শান্তিপুরেও। এই ব্যর্থতার পর কার ঘাড়ে কোপ পড়বে তা নিয়ে চিন্তা দলের অন্দরে।

Advertisement

গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে শান্তিপুর শহরে বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। বিধানসভার উপনির্বাচনে অবশ্য শান্তিপুর থেকে বড় ব্যবধানে লিড পেয়েছিল শাসক দল। বছর দুয়েক আগের পুরভোটে শান্তিপুর শহরে ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২টিতে জেতে তৃণমূল। ২টিতে জয় পায় বিজেপি। লোকসভা ভোটে সেই হিসাব বদলে গিয়েছে অনেকটাই। এমনিতেই গত কয়েক বছরে শান্তিপুর শহরের মানুষের রায় কার্যত পেন্ডুলামের মতো দোদুল্যমান। কখনও বিজেপির দিকে, কখনও তৃণমূলের দিকে।

লোকসভা ভোটে শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডেই লিড পেয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের লিড এসেছে আটটিতে। উপপুরপ্রধান কৌশিক প্রামাণিকের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সামান্য ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। আবার পুরসভার দুই পুর পারিষদ শুভজিত দে’র ২০ নম্বর ওয়ার্ড, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্যের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, শহর তৃণমূল সভাপতি নরেশ লাল সরকারের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডেও পিছিয়ে শাসক দল। তৃণমূলের তাঁত শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অরুণ বসাক যে ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি সেই ৬ নম্বর ওয়ার্ডেও পিছিয়ে তৃণমূল। পুরপ্রধান সুব্রত ঘোষ যে ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন সেই ওয়ার্ডে অবশ্য এগিয়ে তৃণমূল। তবে পুরপ্রধান নিজে যে ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে পিছিয়ে তারা। ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অবশ্য লিড হয়েছে তৃণমূলের। এখান থেকেই এক সময় জিততেন অজয় দে। বর্তমান বিধায়কের বাবা এখানে পুরপ্রতিনিধি। পুরসভার তিন পুর পারিষদের মধ্যে একমাত্র বিকাশ সাহার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে শাসক দল। শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বৃন্দাবন প্রামাণিকের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডেও পিছিয়ে শাসক দল।

Advertisement

উপনির্বাচন এবং পুরভোটের জয় তৃণমূলকে এগিয়ে দিলেও ফের লোকসভায় মুখ থুবড়ে পড়তে হল কেন?

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির প্রভাব পড়েছে ভোটে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, জল সরবরাহ, জঞ্জাল অপসারণের মতো বিষয় নিয়ে মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে ভোট বাক্সে। পাশাপাশি শান্তিপুরের দীর্ঘদিনের বিধায়ক ও পুরপ্রধান অজয় দের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই প্রাক্তন উপপুরপ্রধান আব্দুস সালাম কারিগর, কুমারেশ চক্রবর্তীর মতো বর্ষীয়ান নেতৃত্বের মৃত্যু শান্তিপুর শহরে তৃণমূলে নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি করেছিল। এ ছাড়া নানা সময় দলের পুর প্রতিনিধিদের মতানৈক্য সামনে এসেছে। শহরের মধ্যে তৃণমূলের তরফে সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে এমনটাও নয়। সাংগঠনিকভাবে দুর্বলতাও তৈরি হয়েছে কোথাও কোথাও। এ সবই তাদের বিপক্ষে গিয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের অনেকে।

শান্তিপুরের পুরপ্রধান সুব্রত ঘোষ বলেন, "বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি তো ছিলই। আমরাও সার্বিকভাবে পুর পরিষেবা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি সাধ্যমত মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার। তবুও এমন ফল কেন, আমরা তার বিশ্লেষণ করব।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement