প্রতীকী ছবি।
সরকার অনেক আগেই ঘোষণা করেছে, পুজোয় এ বার সরকারি চিকিৎসকরা কেউই ছুটি পাবেন না। তবে অনেকেই মনে করছেন, সরকারি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের বেশির ভাগ পুজোয় টানা ছুটি নিতে অভ্যস্থ। এত দিনের অভ্যাস অনেকেরই ছাড়তে কষ্ট হবে এবং তাঁরা বিভিন্ন ভাবে ছুটি নেওয়ার চেষ্টা করবেন। ‘অফিসিয়াল’ কোনও ডিউটি তালিকা তৈরি না হলেও সিনিয়র চিকিৎসকেরা অনেকেই নিজেদের মধ্যে ‘সমঝোতার’ মাধ্যমে ছুটি বণ্টন করবেন বা ছুটির জন্য কর্তৃপক্ষের উপর চাপ তৈরি করবেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকেই।
প্রতিবারই পুজোর শুরু থেকে সিনিয়র চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ জুনিয়রদের উপরে দায়িত্ব দিয়ে ছুটি কাটাতে চলে যেতেন। অনেক অস্ত্রোপচার তার জন্য আটকে যেত বা জুনিয়রদের তা করতে হত। হাসপাতালে বেড়ে যেত রেফারও। তাঁদের ঘাড়ে পুজোর ছুটির সময় দায়িত্ব এসে পড়ায় জুনিয়রদের মনে ‘অসন্তোষ’ থাকলেও মেনে নিতে হত। সিনিয়রদের ছুটি নেওয়ার পর্ব চলত দীপাবলি পর্যন্ত। তাই এ বছর তাঁদের অনেকেই পরিবর্তিত অবস্থায় খুশি। এক জন তো বলেই ফেললেন, ‘‘প্রতি বার পুজোয় শুধু আমরা কাজ করি। এ বার সিনিয়রেরাও কাজ করে দেখুন কেমন লাগে।’’
তবে এ বার ছুটি নেই বলে সিনিয়র চিকিৎসকদের অনেকেরও খুব একটা আফশোস নেই। কারণ, এ বার কোনও ভাবেই তাঁরা বেড়াতে যেতে চাইছেন না। জেলা হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিৎসকের কথায়, “আমার নিজের একাধিক শারীরিক সমস্যা আছে। আমার স্ত্রী-রও তাই। এই করোনার মধ্যে তাই আমরা ছুটি পেলেও এ বার বাইরে যেতাম না।” আর এক চিকিৎসক বলছেন, “নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দু’ দিন করে ছুটির একটা ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। সেটা হলেও বেড়াতে যাব না। বাড়িতে দু’দিন একটু ঘুমিয়ে নেব।” জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দেবব্রত দত্তের কথায় অবশ্য, “এ বার কোনও চিকিৎসকই কোনও ছুটি পাচ্ছেন না। সকলকেই পুরনো রুটিন অনুযায়ী ডিউটি করতে হবে।” কল্যাণী জেএমএম হাসপাতালের সিনিয়র বা জুনিয়র, কোনও চিকিৎসক পুজোয় ছুটি পাচ্ছেন না। সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “সবাইকে ডিউটি করতে হবে। কেউ ছুটি পাবেন না।” তবে এখানেও সিনিয়র চিকিৎসকদের অনেকে নিজেদের মতো করে ডিউটি ভাগ করে এক-দু’দিনের ছুটি ‘ম্যানাজ’ করতে পারেন বলে মনে করছেন অনকেই। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “পুজোয় কোনও চিকিৎসকের ছুটির কোনও প্রশ্নই এ বছর ওঠে না।”