প্রতীকী ছবি।
অতিমারির আবহের মধ্যে জেলার একাধিক চিকিৎসককে অন্য জেলায় বদলি করে দেওয়া হল। তার মধ্যে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিন বিভাগের তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। এঁদের মধ্যে দু’ জনকে আগেই কোভিড হাসপাতালের কাজে গাফিলতির অভিযোগে শো-কজ করা হয়েছিল।
নদিয়া জেলা হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসক রয়েছেন বদলির তালিকায়। তাঁদের মধ্যে জেনারেল মেডিসিন বিভাগের ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায়, তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমোদ প্রসাদ যেমন রয়েছেন তেমনই আছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের কৌশিক বসু ও মহানন্দ মিশ্র। এ ছাড়া চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক সৌগত সাহা, করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক শ্বেতা মাহাতো ও মহেশগঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক নন্দিতা রায়কে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে।
এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে জেলা হাসপাতালের জেনারেল মেডিসিনের তিন চিকিৎসকের বদলি নিয়ে। তপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক হলেও দীর্ঘ দিন নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের ডেপুটেশনে কর্তব্যরত ছিলেন। কল্যাণীর কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালে তাঁকে ডিউটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে সঠিক সময়ে উপস্থিত না হওয়া ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে শো-কজ করেন। চিকিৎসক ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও কোভিডের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। কৃষ্ণনগর গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে ডিউটি থাকা সত্বেও তিনি যাননি এবং কৃষ্ণনগরের বাইরে চলে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁকেও শো-কজ করা হয়। পরে অবশ্য জানা যায় যে, তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিয়েই বাইরে গিয়েছিলেন। ফলে তপনবাবু শাস্তির মুখে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ব্রজেশ্বরবাবু বেঁচে যাবেন বলে মনে করেছিলেন অনেকেই।
তপনবাবুকে বদলি করা হয়েছে কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে আর ব্রজেশ্বরবাবুকে বদলি করা হয়েছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে। তা হলে কেন চিকিৎসক বিনোদ কুমার দাসকে বদলি করা হল না সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধেও কোভিড হাসপাতালে ডিউটি থাকা সত্বেও না-যাওয়ার অভিযোগ উঠিছিল। তাঁকেও শো-কজ করা হয়েছিল। জেলার কর্তাদের একটা্ অংশ অবশ্য মনে করছেন যে, কোভিড হাসপাতালে না গেলেও বিনোদবাবু সে দিন জেলা হাসপাতালে রাত পর্যন্ত ডিউটি করেছিলেন। তাঁকে একই দিনে এবং একই সময়ে কোভিড ও জেলা হাসপাতালে একসঙ্গে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। ফলে তিনি ‘ফাঁকি’ দিয়েছেন সেটা বলা যায় না। তাই তিনি বদলি থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
তবে এ সবের মধ্যে সদ্য কোভিডের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হওয়া চিকিৎসক আমোদ প্রসাদকে কেন কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে বদলি করা হল তা নিয়ে অনেকেই ধন্ধে। কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে সে ভাবে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠেনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, “বদলির কারণ স্বাস্থ্য ভবনই বলতে পারবে।”