সহজলভ্য আগ্নেয়াস্ত্র

অনায়াসে হাতে চলে  আসছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র! বড় কোনও গন্ডগোল তো বটেই, তুচ্ছ পারিবারিক ঝগড়াতেও ব্যবহার হচ্ছে সেই সব। ফরাক্কার শিবনগর দক্ষিণপাড়ার ঘটনা।

Advertisement

বিমান হাজরা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৫০
Share:

অনায়াসে হাতে চলে আসছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র! বড় কোনও গন্ডগোল তো বটেই, তুচ্ছ পারিবারিক ঝগড়াতেও ব্যবহার হচ্ছে সেই সব। ফরাক্কার শিবনগর দক্ষিণপাড়ার ঘটনা। বাবার জমিতে ঘর করতে চেয়েছিল ছেলে। রাজি হননি বাবা। তা নিয়ে বিবাদ। শেষতক বাবাকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে ছেলের বিরুদ্ধে। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় বোনও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বৃদ্ধ বাবা মইমুল শেখ ও বোন মাহমুদা খাতুনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

অভিযুক্তের মা আমিনুর বিবির কথায়, “ছেলে যে আসল পিস্তল বাড়িতে এনেছে তা ভাবতেই পারিনি। আমরা ভেবেছিলাম, খেলনা পিস্তল এনে হয়তো লোকটাকে ভয় দেখাচ্ছে। কিছু বোঝার আগেই পর পর গুলি চালায় ছেলে আক্তারুল।”

আসিয়া বিবি গিয়েছিলেন সুতির মহালদারপাড়ায় গঙ্গার চরে। আচমকা গুলি এসে লাগে আসিয়ার পিঠে। তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কে গুলি চালাল তার কোনও হদিশই মেলেনি। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভানু শেখের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ঝগড়া লেগেই থাকত। পড়শি রহমান শেখ এক দিন ভানুকে এই ঝগড়া থামাতে বলেন। ক্ষিপ্ত ভানু ঘরের মধ্যে রাখা পিস্তল এনে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। রহমানকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে মারের ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে ফরাক্কা থানায় গিয়ে পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি-সহ আত্মসমর্পণ করে ভানু।

Advertisement

ক’দিন আগেই গোয়ালে গরু রাখা নিয়ে বিবাদে রঘুনাথগঞ্জের সেকেন্দ্রার যুবক রাজকুমার ঘোষ দাদা অমর ঘোষকে গুলি করে বলে অভিযোগ। মারা যান অমর। পুলিশ গ্রেফতার করে রাজকুমারকে। পুলিশ জানাচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিদের কারণেই খুব অনায়াসে লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র পেয়ে যাচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারে ধৃত দুষ্কৃতীরা অনেকেই একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরিয়েই ফের সেই কারবারে নেমে পড়ছে তারা।

জঙ্গিপুরের সরকারি আইনজীবী আফজালউদ্দিন বলছেন, “আইনে স্পষ্ট বলা আছে, আগ্নেয়াস্ত্র সহ ধৃতদের ৬০ দিনের বেশি জেল হেফাজতে রাখা যাবে না। তার মধ্যেই চার্জশিট পেশ করতে হবে। কিন্তু পুলিশ তা পারছে না। কারণ, এক্ষেত্রে পুলিশকে এক্সপার্ট ওপিনিয়ন রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। সময়ে সে রিপোর্ট আসছে না। ফলে জামিন পেয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা।” জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, “নজরদারি বেড়েছে বলেই আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের পথেই ধরা পড়ে যাচ্ছে কারবারিরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement