ছবি: সংগৃহীত
সংরক্ষণের গেরো থেকে পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান ছাড় পেলেও বাঘা বাঘা কিছু নেতা আটকে গিয়েছেন। আর তা নিয়ে দলের অন্দরেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন আর সংশয়। অনেকেই মনে করছেন, যাঁরা সংরক্ষণের জালে আটকা পড়েছেন তাঁদের স্ত্রী-রা যদি ওই কেন্দ্রে টিকিট না-পান তা হলে গোষ্ঠী কোন্দল মাথা চাড়া দিতে পারে দলে।
এর মধ্যে দু’ই অতি প্রভাবশালী কাউন্সিলর আছেন যাঁরা আবার পুরপ্রধান-বিরোধী হিসাবে পরিচিত। তাই আসন্ন পুরভোটে টিকিট বণ্টন কী হতে পারে তা নিয়ে শহর জুড়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
কৃষ্ণনগর পুরসভা বরাবরই ডানপন্থিদের দখলে। ২০১৩ সালে পুরভোটের আগে পুরপ্রধান আসীম সাহা-সহ কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে যোগ দেন। ওই বছরই প্রথম কংগ্রেস থেকে পুরবোর্ড ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। ২৪টি আসনের মধ্যে ২২টিতেই তারা জয়ী হয়। পুরবোর্ড ছিল বিরোধীশূন্য। যাঁরাই এ বার সংরক্ষণের জালে আটকেছেন তাঁরা সকলেই তৃণমূলের। ৮ নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ফলে প্রভাবশালী প্রাক্তন কাউন্সিলর শিশির কর্মকারের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। তিনি গত বারই প্রথম কাউন্সিলর হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী প্রার্থী হবেন কিনা সেই প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। সংরক্ষণের গেরোয় আটকে গিয়েছেন আরেক প্রভাবশালী ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর স্বপন সাহা। যিনি আবার প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার চরম বিরোধী হিসাবে পরিচিত। স্বপনবাবু নিজে দু’বারের কাউন্সিলর। তাঁর স্ত্রী শান্তশ্রী সাহা এই ওয়ার্ড থেকে অতীতে এক বার কাউন্সিলর হয়েছিলেন। এই ওয়ার্ড এ বার মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, শান্তশ্রীকেই টিকিট দিতে পারে দল।
২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর বিনয় হালদার মোট চার বারের কাউন্সিলর। তাঁর ওয়ার্ডটা এ বার তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত। ফলে তাঁর ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। একই ভাবে সংরক্ষণের গেরোয় আটকে গিয়েছেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিত্যানন্দ প্রামাণিক। তাঁর স্ত্রী প্রতিমা প্রামাণিক আবার দু’বারের কাউন্সিলর। তাই ওই ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, প্রতিমা প্রামাণিক টিকিট পেতে পারেন। যদিও শিশির কর্মকার থেকে স্বপন সাহা—সকলেই বলছেন, “দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই মেনে নেব।”
কিন্তু বিষয়টা কি এত সহজ হবে? সত্যিই কি এই কাউন্সিলররা টিকিট না পেলে সহজে তা হজম করবেন? দলের অন্দরে যখন এই প্রশ্নটাই ঘুরছে।