Smuggling

Smuggling: হেরোইন বাজারে বড় সম্বল ‘ক্রুড’

গোয়েন্দাদের দাবি, নদিয়ার পলাশিপাড়া বা কালীগঞ্জ এলাকাতে উচ্চমানের হেরোইন তৈরি হয়।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২১ ০৮:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভাল মানের হেরোইনের দাম কোটি টাকা বা কারও বেশি। জেলার অনেকের পক্ষে তা কেনা অসম্ভব। তাই নেশা করতে ভরসা সস্তার ‘ক্রুড’। দু’শো আড়াইশো টাকা দিলে একটি পুরিয়া মেলে। জেলায় এই সস্তার ক্রুডেরই রমরমা।

Advertisement

গোয়েন্দাদের দাবি, নদিয়ার পলাশিপাড়া বা কালীগঞ্জ এলাকাতে উচ্চমানের হেরোইন তৈরি হয়। সাদা রঙের এক কিলোগ্রামর দাম ১ কোটি থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষের মধ্যে। সেটা তৈরি হওয়ার পর ক্যারিয়ার মারফত হয় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে না হয় ট্রেন পথে সোজা কলতাকায়। এর ছাড়াও ভাল মানের এক কিলোগ্রাম হেরোইনের দাম ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার মধ্যে। আবার ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দিয়েও এক কিলোগ্রাম হেরোইন পাওয়া যায় বলে গোয়েন্দাদের দাবি। এই সব হেরোইন চলে যায় মূলত পাশের জেলা মুর্শিদাবাদে। সেই সঙ্গে ভাগীরথী নদী পার হয়ে বর্ধমান। সেখান থেকে বীরভুম। ব্রাউন সুগারের দামও প্রায় একই রকম। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ব্রাউন সুগারের রঙ অনেকটা ব্যাসনের মতো। ভাল মানের ব্রাউন সুগার মেলে ৫০-৬০ লক্ষ টাকা কিলোগ্রাম দরে।

তবে এ সবই স্থানীয় নেশাড়ুদের নাগালের বাইরে। কারণ, এই মানের হেরোইন বা ব্রাউন সুগার কেনার মতো আর্থিক ক্ষমতা জেলায় খুব কম মানুষেরই আছে। তাই খরিদ্দারদের কথা ভেবে কম দামের ‘মাল’ বেচার চেষ্টা করে হেরোইন ব্যবসায়ীরা। এই মানের হেরোইনের নাম ‘ক্রুড’। এক কিলোগ্রাম ক্রুডের দাম দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা। মূলত এই ক্রুডই নদিয়ার বাজারে চলছে রমরমিয়ে। বিক্রি হচ্ছে পুরিয়া করে। গুণগত মান ও পরিমাণ অনুযায়ী বাজারে এক পুরিয়ার দাম দেড়শো থেকে আড়াইশো টাকার মধ্যে। প্রতি পুড়িয়ায় থেকে ৫০ থেকে ৬০ মিলিগ্রাম করে। এই হেরোইনের মান কম হওয়ায় দিনে একাধিক পুরিয়া না-হলে ঠিক মতো নেশা হয় না। নদিয়া জেলা থেকে হেরোইন-সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জানতে পেরেছে যে, হেরোইনের নেশায় আশক্ত করার জন্য প্রথম প্রথম একটু ভাল মানের হেরোইন দেওয়া হয়। নেশা পুরোপুরি ধরে গেলে শুরু হয় ক্রুড মাল দেওয়া। এই ক্রুডই প্রতিদিন ছড়িয়ে পড়ছে পাড়ায়।

Advertisement

গোয়ান্দা সূত্রে খবর, জেলায় মূলত মোটরবাইকে হেরোইন পাচার করা হয়। তবে লোকাল বাসেও অনেক সময় বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয় হেরোইন। দিন কয়েক আগেই পলাশিপাড়া থেকে প্রায় ৫০ গ্রাম হেরোইন-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে দু’জন ছিল বীরভূমের। মাস কয়েক আগেও কৃষ্ণনগর থেকে হেরোইন ব্যবসায়ী এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল কোতোয়ালি থানার পুলিশ। কিন্তু তাতেও অবস্থার বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। এখনও পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি হচ্ছে হেরোইন।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, যারা বিক্রি করছে তারা একেবারেই দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। মাথা বা চাঁইরা এদের দিয়ে সামান্য কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রি করছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে। এই সংখ্যাটাও এত বেশি হয়ে গিয়েছে যে, এদের ভিতরেও শুরু হয়ে গিয়েছে রেষারেষি। তার জেরে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে। পুলিশেরই একটা অংশের মতে, দিন কয়েক আগে চাপড়ার আজিজ মল্লিকের খুনের ঘটনা সেটাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। (চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement