প্রতীকী ছবি।
গত জানুয়ারি থেকে পুরভোট নিয়ে বহরমপুরে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছিল। ঠিক সে সময়ে খুনের ষড়যন্ত্রের মামলায় নাম জড়াতে বেপাত্তা হয়ে যান মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা বহরমপুর মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি শিলাদিত্য হালদার। দীর্ঘ ৯ মাস আত্মগোপন করে থাকার পরে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন মিলতেই তিনি প্রকাশ্যে এলেন। সূত্রের খবর, গত ১৫ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট থেকে তিনি আগাম জামিন পেয়েছেন।
শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের আগাম জামিনের নির্দেশিকা নিয়ে তিনি বহরমপুরে সিজেএমের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেখান থেকেও তিনি জামিন পান। দীর্ঘ ৯ মাস পরে রবিবার শিলাদিত্যকে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে খোশ মেজাজে গল্প করতে দেখা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বহরমপুরের গোরাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা-সহ তিন জন গ্রেফতার হয়। ধৃতদের মধ্যে দু’জন বড়ঞার এবং এক জন বহরমপুরের পাকুড়িয়ার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, সে সময় জেরার মুখে পড়ে ধৃতরা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার ও বহরমপুরের মণীন্দ্রনগর অঞ্চল কংগ্রেসের সহসভাপতি শ্রীদাম সেনের নাম এনেছিল। পুলিশের দাবি, বহরমপুর শহর লাগোয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক তৃণমূল নেতাকে খুনের পরিকল্পনার জন্য ওই সব অস্ত্র আনা হচ্ছিল। তদন্তে জানা যায় সেই পরিকল্পনার মাথা শিলাদিত্য। গত জুলাই মাসে শ্রীদাম গ্রেফতার হলেও শিলাদিত্য অধরা থেকে যান। সূত্রের খবর, অন্য অভিযুক্তরা আগে এই মামলায় জামিন পেয়েছে। এবারে শিলাদিত্যও এই মামলায় আগাম জামিন পেলেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘কী ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হল আমরা জানলাম না। তৃণমূলের নেতা স্বপ্ন দেখেছিলেন কে কাকে খুন করছে। তাই শিলাদিত্যকে মামলা গিয়ে গ্রেফতার করতে হবে। এটাই বাংলার আইন, মুর্শিদাবাদের কংগ্রেসকে জব্দ করার আইন।’’
মিথ্যা মামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘সে সময় তদন্তে যেটা পাওয়া গিয়েছে এবং অভিযুক্তদের বয়ান অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।’’
শিলাদিত্যের দাবি, ‘‘জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার কথা বলেছিল তৃণমূল। কিন্তু তাঁদের দলে যাইনি বলেই বার বার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ভাকুড়িতে তৃণমূল নেতা খুনের মামলায় আমাকে অভিযুক্ত করেছিল। কিন্তু আদালত আমাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে।’’
মিথ্যা মামলার অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস বলেন, ‘‘জামিন পেয়ে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। জামিন পাওয়া মানেই মামলা থেকে মুক্তি নয়।’’