—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুর্শিদাবাদের সঙ্গে আমের সম্পর্ক বহু দিন যাবৎ। নবাবরা মুর্শিদাবাদে রাজত্ব করার পরে আমের সুখ্যাতি আরও বেড়েছে। তবে আমের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও গুণমান কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। বিশেষ করে জেলার ঐতিহ্যবাহী আমগুলি নিয়ে। যদিও অনেক আমই এখন বিলুপ্তির পথে। মির্জা পসন্দ, রানী পসন্দ, সফদার পসন্দ, কোহিতুর, কালাপাহাড় এমন অনেক আম জেলার কয়েকটি বাগান ছাড়া মেলা দুর্লভ।
জেলায় ঐতিহ্যবাহী বাগানগুলির মধ্যে অন্যতম হল, ফৈয়াজ বাগ, রইস বাগ। নবাব ফৈয়াজ আলি খান জাফরাগঞ্জ প্রাসাদের ঠিক বিপরীত প্রান্তে একটি বড় আমবাগান তৈরি করেছিলেন। বাগানটি তাঁর নাম অনুসারে ফৈয়াজ বাগ নামে পরিচিত। এই বাগানের উল্লেখযোগ্য আমগুলি হল, কোহিতুর, কালাপাহাড়, মোলায়েম জং, বেগম পসন্দ, নবাব পসন্দ, মির্জা পসন্দ, রানি, চম্পা প্রভৃতি। মুর্শিদাবাদে প্রায় সমস্ত আম বাগান ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনও টিকে রয়েছে এই বাগান। যে কয়েকটি বাগানে নবাবদের প্ৰিয় ‘কোহিতুর’ পাওয়া যায় তাঁর মধ্যে ফৈয়াজ বাগ অন্যতম। এই ঐতিহ্যবাহী আমের বাজার মূল্য জেলায়, আম প্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা অবধি হয়ে থাকে। তোপখানা গ্রামে রইস বাগ বাগানটি মীরজাফরের বংশধর সৈয়দ রইস মির্জা ঊনবিংশ শতকের প্রায় প্রথমদিকে তৈরি করেন। সেই সময়কালে পুরনো নবাবি বাগানগুলির অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। তাই নবাবি আমলের পুরনো আম সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে রইস মির্জা এই বাগানে পুরনো আমলের প্রায় শতাধিক প্রজাতির আম গাছ লাগিয়েছিলেন বলে জানা যায়। মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্যবাহী আমগুলির বিষয়ে উদ্যান পালন আধিকারিক প্ৰিয়রঞ্জন ষণ্ণিগ্রহী বলেন, ‘‘নবাবি আমের মধ্যে কোহিতুর, চম্পা, রানী পসন্দ, সফদার পসন্দ, মোলায়েমজাম উল্লেখযোগ্য।’’ তিনি এও জানান, রইস মির্জার বাগানে এখনও ৭৬ রকমের আম আছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, "বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু যে আম সেই সব আম আর কেউ লাগায় না। যে সব আম গুলির ফলন বেশি সেসব আমগুলিই সবাই লাগায়। ঐতিহ্যবাহ আম টিকিয়ে রাখতে গেলে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।"