নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।
বিক্ষোভের আঁচ থিতিয়ে এলেও নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে যে চাপা অসন্তোষ রয়েছে তা অনুমান করে মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলার অন্তত ৮০টি গ্রামীণ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করল জেলা পুলিশ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিপুর এবং তার লাগোয়া ওই গ্রামগুলিতে চাপা উত্তেজনা রয়েছে।
রবিবার, ওই এলাকায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধে বোমা পড়েছিল মুড়ি মুড়কির মতো। অভিযোগ, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে গুলিও চালাতে হয়েছিল। অশান্তির আশঙ্কায় এ দিন তাই জঙ্গিপুরের ওই এলাকায় রাতেই ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ।
ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও মুর্শিদাবাদের মানুষের মধ্যে নয়া আইন নিয়ে তীব্র উদ্বেগ যে রয়ে গিয়েছে, হরিহরপাড়ার বিলপাড়া গ্রামে আরও একটি মৃত্যুর ঘটনা তারই নজির বলে মনে করছে প্রশাসন। নজরুল মিঞা (৫৯) নামে ওই গ্রামবাসী, অসমে এনআরসি ঘোষণার পর থেকেই নিজের জমি-বাড়ির হারানো দলিলের খোঁজ করছিলেন বলে তাঁর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভের জেরে অশান্তি ও গোলমালের আশঙ্কায় জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ শহর-সহ রঘুনাথগঞ্জ ১ ও ২ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামে রাতভর ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত এই বিধি বহাল থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে সেকেন্দ্রা, মিঠিপুর, সম্মতিনগর, দফরপুর, কানুপুর, মির্জাপুর প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিছু এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে। সোমবার রাতে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কের তৈরি হয় রঘুনাথগঞ্জ শহরের মধ্যেও। সেই কারণে রাতে সমস্ত এলাকায় পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। শহর-সহ শতাধিক উত্তেজনাপ্রবণ গ্রামে নৈশকালীন ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।”
এ দিন পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি নিয়ে এলাকায় মাইক প্রচার করা হয়েছে। কোনওরকম গুজবে কান না দিতে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কোথাও কোনও সন্দেহজনক কিছু দেখা গেলে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। সুতিতেও পুলিশি টহল ও ১৪৪ ধারা বহাল রাখা হয়েছে।
এ দিন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরী জঙ্গিপুরের মহম্মদপুরে জনসভা করেন। জনসভায় ভিড় ছিল নজরকাড়া। সেখানে অধীর কড়া ভাষায় নাগরিকত্ব আইন, তিন তালাক আইন ও ৩৭০ ধারা বিলোপের কড়া সমালোচনা করেন।