প্রতীকী ছবি
গতবার বেলডাঙা পুরসভায় ১৪টি আসনের মধ্যে ৭টিই দখল করে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। পরে তাঁদের পাঁচ কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। অন্য দল থেকে আরও কাউন্সিলররা শাসক দলে আসায়, বোর্ডের দখলও চলে যায় তৃণমূলের হাতে। তাই এ বার পুরভোটের প্রচার শুরু হওয়ার সময়ই কংগ্রেস ও বাম নেতারা টের পেয়েছেন তাঁদের দলের নিচু তলার কর্মীদের ক্ষোভের। ওই কর্মীদের বক্তব্য ছিল, কাউন্সিলররা যদি শেষ পর্যন্ত তৃণমূলেই চলে যাবেন, তা হলে সাধারণ মানুষ কেন কোনও কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তাঁদের সেই মনের কথা পড়ে বহরমপুরের সাংমসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী শনিবার বেলডাঙায় সরাসরি জানিয়ে দিলেন, এ বার আর তেমন কোনও কিছু হওয়ার আশঙ্কা নেই। তাঁর কথায়, কেউ কেউ দলের সঙ্গে ‘বেইমানি’ করেছেন, কিন্তু এ বার প্রার্থী বাছাই করা হবে অনেক ভেবেচিন্তে। অধীরবাবু বলেন, ‘‘যারা তৃণমূলে গিয়েছেন, কিন্তু তৃণমূলে টিকিট পাচ্ছেন না এমন লোক কংগ্রেসে এসে টিকিটের দাবি করতে পারেন। তাঁদের কোনও ভাবেই টিকিট দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ‘‘দ্বিধা, দ্বন্দ্ব, জড়তা ঝেড়ে ফেলুন। পঞ্চায়েতের মতো ভোট করতে চেষ্টা করবে তৃণমূল। সেটা রুখে দিন।’’
বেলডাঙার সম্পর্ক হল-এ এ দিন অধীরবাবুর সভায় ভিড় উপচে পড়ে। সেখানে অধীরবাবু সরাসরি বলেন, ‘‘বেলডাঙায় যেটা চলছে সেটা পৌরসভা নয়। চৌরসভা।’’
এর জবাব দিতে গিয়ে বেলডাঙার পুরপ্রধান তৃণমূলের ভরত ঝাওর বলেন, “উনি অনেক বড় মাপের নেতা। লোকসভার বিরোধী দল নেতা। এই নিয়ে কোনও কথা বলব না। বেলডাঙার মানুষ এর বিচার করবেন। বিচার করে যে রায় দেবেন, তা মাথা পেতে নেব।”
তবে এই দিন বামেদের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে কংগ্রেসের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই কংগ্রেস সূত্রের খবর। অধীরবাবু বেলডাঙা আসার পরেই বাম-কংগ্রেস আসন রফা নিয়ে ঘরোয়া আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন এ দিন কোনও কথা হয়নি। তবে তাঁদের কথা, অনেক কথাই আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে আসন রফা চূড়ান্ত হবে।
অধীর কী বার্তা দিয়ে গেলেন, সেটা জানার চেষ্টা করছেন বাম নেতারাও। শনিবার সিপিএমের বেলডাঙা এরিয়া কমিটির সদস্য প্রিয়রঞ্জন ঘোষ বলেন, “অধীরবাবু বেলডাঙা আসার পর জোট চুড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো এক বা দু’দিনের মধ্যে দু’পক্ষের বসে আলোচনার তারিখ চুড়ান্ত হবে। তার পর রফা চুড়ান্ত হবে বলে মনে হচ্ছে।”