ক্লাসরুমে এসি। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গে বর্ষা এলেও এখনও সেই ভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি! ভ্যাপসা গরম। যার জেরে উপস্থিতির হার ক্রমে কমেই চলেছিল স্কুলে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের বেতনের টাকায় স্কুলে এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র) বসালেন মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার রসোড়া অম্বিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
গরমের ছুটির পর চলতি মাসের শুরুতেই রাজ্যে স্কুল খুলে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি ছিল দক্ষিণবঙ্গে। এর ফলে বহু পড়ুয়াই স্কুলমুখো হচ্ছে না বলে শোনা যাচ্ছিল। রসোড়া অম্বিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কমছিল। স্কুল সূত্রে খবর, রসোড়া অম্বিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে। পড়ুয়াদের সংখ্যাও ন’শোর বেশি। সকালে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করেও বিশেষ লাভ হয়নি। গরমে অধিকাংশ পড়ুয়াই স্কুলে আসছিল না। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলমুখো করতেই নিজেদের খরচে স্কুলে এসি বসানোর সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকেরা। সব মিলিয়ে স্কুলে আটটি এসি বসিয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এসি বসানোর পর থেকেই স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার বাড়তে শুরু করেছে। এখন বাড়িতে গরম। স্কুলে ঠান্ডা। আর সেই কারণেই এখন তারা স্কুলে চলে আসছে। তন্বী ঘোষ নামে এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘প্রচণ্ড গরমের ভয়ে স্কুলে আসছিলাম না।। এখন তো স্কুলেই ঠান্ডা। বাইরে ৪০ ডিগ্রি আর স্কুলে ২৪ ডিগ্রি। এখন স্কুলে আসতেই ভাল লাগছে।’’
স্কুল সূত্রে খবর, পরিচালন সমিতি ও শিক্ষকদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এসি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কান্দি পুরসভার চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বিধায়কের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। নিজেদের বেতনের টাকা দিয়েই এসি কিনেছেন শিক্ষকেরা। সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও নিয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, ঋণ শোধও তাঁরাই করবেন। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক দীপ্তেন্দু ধর বলেন, ‘‘আরামদায়ক পরিবেশে ছাত্রছাত্রীরা যাতে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে পারে, তাই এই ব্যবস্থা। শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।’’