ফিরবে কি এই দৃশ্য
রাত পেরোলেই ভ্যালেন্টাইন’স ডে। প্রতি বছর পুজোর পর থেকে ফেব্রুয়ারির এই মাঝামাঝি পর্যন্ত পর্য়টনের মরসুম লালবাগ শহরের। তবে শহরে মূলত পর্যটকরা সব থেকে বেশি আসেন ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। লালবাগ শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলের কথায়, দুই মাসের রোজগারেই চলে সম্বৎসর। তবে এই বছর যা চলল তাতে শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত কারও কপালেই চিন্তার ভাঁজ আর ছাড়ল না। অনেকেই বিকল্প কাজের চেষ্টায় রয়েছেন।
লালবাগ শহরের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলেরই দাবি, এই পর্যটক মরসুম যতটা খারাপ গেল, ততটা খারাপ অবস্থা তাঁরা গত দশ বছরে কখনও দেখেননি। অন্য বছর যেখানে হাজারদুয়ারি চত্বরে এই সময় তিল ধারণের জায়গা থাকে না, এ বছর সেখানে হাজারদুয়ারি চত্বর ছিল প্রায়ই ফাঁকাই।
কেন এই অবস্থা? অনেকেরই দাবি, ডিসেম্বর থেকেই পর্যটক আসতে শুরু করেন। কিন্তু এ বার ডিসেম্বর থেকেই ট্রেনের সংখ্যা কমেছে। লালগোলা শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় অনেকেই আর এ দিকে আসার ঝুঁকি নেননি। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই বাইরের পর্যটকদের মধ্যে ধুম পড়ে যায় হোটেল বুকিং বাতিল করার।
এ দিন হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের এক আধিকারিক সুনীল কুমার ঝা বলেন, ‘‘এই বছর পর্যটক একেবারেই কম।’’
সিটি মুর্শিদাবাদ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এত খারাপ পর্যটন মরসুম আগে কখনও হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না। ডিসেম্বর আর জানুয়ারি মাসেই আসল ব্যবসাটা হয়। কিন্তু ডিসেম্বরের ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হল না।’’
মুর্শিদাবাদ শহর পর্যটক গাইড কমিটির কর্তা গোপাল দাস বলেন, ‘‘আজ থেকে পর্যটক মরসুম শেষের দিকে যেতে শুরু করল। অন্য বছর এই সময় দাঁড়িয়ে একটু চা খাব তার সময়ও পাই না। এই বছর যা হল তাতে সংসার চালাতে এ বার বিকল্প পথের খোঁজ করতে হচ্ছে।’’
লালবাগের নামকরা এক হোটেলের ম্যানেজার সুরজিৎ হালদারের কথায়, ‘‘প্রতি বছর পর্যটক মরসুমের জন্য আমাদের হোটেল বলে নয়, লালবাগের অন্য হোটেলেও কাজের জন্য আলাদা করে লোক নিতে হয়। যা এ বছর করতে হয়নি। এখন চিন্তা যে টাকাটা বিনিয়োগ করা হয়েছে সেটা উঠবে কী করে!’’ মুর্শিদাবাদ শহর টাঙ্গা চালক ইউনিয়নের সম্পাদক মনু শেখও বলেন, ‘‘সারা বছর কিভাবে চলবে সেটাই চিন্তার বিষয়।’’