মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ও ছোটে ‘সরু সেতু’ দিয়ে

কিন্তু সংস্কার তো দূরস্থান, পূর্ত দফতরের দায়সারা জবাব— ‘সংস্কারের চেষ্টা হচ্ছে।’ 

Advertisement

কৌশিক সাহা

কান্দি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

নড়বড়ে সরু সেতু। ছবি: কৌশিক সাহা

শীর্ণ সে সেতু ধরে হামেশাই ছোটে উত্তরবঙ্গগামী মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়।

Advertisement

কিন্তু সংস্কার তো দূরস্থান, পূর্ত দফতরের দায়সারা জবাব— ‘সংস্কারের চেষ্টা হচ্ছে।’

উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেই সেতুটির স্থানীয় নাম ‘সরু সেতু।’ তবে, হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কে বড়ঞা ব্লকের কানাময়ূরাক্ষী নদীর উপর একমুখী সেই সেতুটির একটি সাবেক নাম আছে— বাদশাহি সেতু।

Advertisement

ব্রিটিশ আমলের তৈরি ওই সেতুটির বয়স জানা নেই পূর্ত দফতরের। বয়সের ভারে ন্যুব্জ সেতুটি দ্রুত সংস্কার এখন অবসম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি একটি নতুন সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তাও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু সে ব্যাপারে প্রশাসনিক কোনও তোড়জোড় নেই বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে সরু সেতুর উপরে ‘সাবধান বিপজ্জনক সেতু’ লিখেই দায় সেরেছেন কর্তারা। ভারী যানবাহন চলাচলও বন্ধ করা হয়েছে ওই সেতুর উপর দিয়ে। তবে তা নিছক কথার কথা, ময়ূরাক্ষী নদী থেকে বালি ও বীরভূমের পাহাড় থেকে পাথর বোঝাই ডাম্পারের লাইন দেখেই তা মালুম হয়। একই ভাবে যাত্রী বোঝাই বাস নিত্য ছুটছে ওই সেতুর উপর দিয়েই। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েও ওই বিপজ্জনক সেতুটিই ব্যবহার করা হয়েছিল।

বড়ঞার কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক বলেন, “আমি একাধিকবার বিধানসভায় ওই সেতু সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। দাবি জানিয়েছি নতুন সেতুর। কিন্তু রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ওই সেতুর উপর মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা লেগে আছে। বছর তিনেক খানেক আগে দুধ বোঝায় একটি ট্যাঙ্কার সেতুর রেলিং ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। ঘটনায় চালকের মৃত্যু হয়েছিল। হামেশাই ওই সেতুর উপর পণ্য বোঝাই যানবাহন বিকল হয়ে পরার ঘটনাও ঘটে। সেই সময় ঘন্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে, এমন নজিরও রয়েছে।

৪০ মিটার লম্বা ওই সড়ক ধরে নিয়মিত ছুটছে পাথর বোঝাই ডাম্পার। স্থানীয় এক ডাম্পার চালক দীপক মণ্ডল বলেন, “আমি প্রায় রোজ বার চারেক ওই সেতু পারাপার করি পাথর বোঝাই গাড়ি নিয়ে। সেতুর অবস্তা যে বেশ খারাপ তা জানি। কিন্তু উরায় কী!’’

প্রায় একই সুরে স্থানীয় বাস চালক সুকুমার মণ্ডল বলেন, “দৌলতাবাদের বালিরঘাট সেতুতেই কী ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটল, আর এই সেতুটি তো যে কোনও দিন ভেঙে পড়তে পারে। কিন্তু কী করব, আমরা চাইলেই তো সেতু মেরামত হবে না!”

পূর্ত দফতরের বহরমপুর ২ নম্বর হাইওয়ে সেকশনের বিভাগীয় আধিকারিক দীপনারায়ণ শীল বলেন, “সেতুটি খুব সরু। চওড়া করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি

নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আমরা নকশা তৈরির কাজ শুরু করেছি। দ্রুত যাতে ওই সেতুটি সংস্কার হয় সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement