মুর্শিদাবাদের লালগোলার ময়া থেকে বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত পরীক্ষা মূলক ভাবে পণ্য পরিবহনের সূচনা করলেন ভারত সরকারের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সহ আধিকারিকেরা। ছবি অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
মুর্শিদাবাদের লালগোলা ব্লকে পদ্মা নদীর উপরে ময়ায় পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হল নদী-বন্দর। সোমবার এই বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
তিনি জানান, ময়া থেকে বাংলাদেশের আরিচা হয়ে অসমের ধুবরিতে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রায় ৯৩০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। এর ফলে জলপথে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২.৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন পণ্য রফতানি করা যাবে।
ময়ার এই বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই জাহাজ যাবে পদ্মার উপর দিয়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ বন্দরে। এই জলপথের ৪.৫ কিলোমিটার ভারতে, বাকি ১১.৫ কিলোমিটার বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সচিব সামশুল আরিফের কথায়, ‘‘জলপথে পরিবহণ দু’টি দেশেরই উপকারে আসবে এবং ভবিষ্যতের জন্য তা খুব ফলপ্রসূ হবে। দুই দেশের বন্ধুত্ব এর ফলে আরও সুদৃঢ হবে। ময়া বন্দরের এই জলপথ নিয়ে বাংলাদেশ খুবই আশাবাদী। এর ফলে বাণিজ্য আরও বাড়বে দুই দেশের মধ্যে।’’
ভারতীয় জলমার্গ প্রাধিকরণের কলকাতার অধিকর্তা অরবিন্দ কুমার বলেন, ‘‘২০২২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনার পরে ময়া বন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে প্রায় হাজার কিলোমিটার পেরোতে হয়। ময়ায় বন্দর চালু হওয়ায় বাণিজ্যের সুবিধা অনেক বাড়ল। এখান থেকে খাদ্য সামগ্রী, পাথর, ফ্লাই অ্যাশ সবই পাঠানো সম্ভব হবে। এই বন্দর মুর্শিদাবাদের উন্নয়নের দরজা খুলে দেবে। প্রচুর লোক কাজ পাবে। এর আগেও মুর্শিদাবাদে বন্দর ছিল। কিন্তু নদীর গতি পথ পরিবর্তনের ফলে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’
তিনি জানান, ময়া থেকে ২.৬ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহণের লক্ষ্য রাখা হয়েছে। ময়া বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার কর্তা জালালুদ্দিন বলেন, ‘‘২০২২ সালের ১২ এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আমাদের একটি মৌ স্বাক্ষরিত হয় বন্দর তৈরির ব্যাপারে। প্রায় সাড়ে ৪কোটি টাকার প্রকল্প।’’
এই বন্দর দিয়ে আপাতত যাবে পাথর, ছাই, কয়লা, বোল্ডার। এই সব আসবে ঝাড়খণ্ড, ফরাক্কা ও সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। মোট ২৫ বিঘে করে জমি দু’তিনটি সংস্থা নিয়ে রেখেছে এর জন্য। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পণ্য যাবে ত্রিপুরাতেও। জলপথে পণ্য ত্রিপুরায় যাবে মাত্র সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার পথ পেরিয়ে।